ফরিদপুরে আল-মদিনা নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে গর্ভবতীকে সিজারের সময় নবজাতকের মাথাসহ শরীরের কয়েক জায়গায় কেটে ফেলেছেন প্রশিক্ষণবিহীন নার্স। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতাল। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ এলাকার বাসিন্দা গর্ভবতী রুপা আক্তারকে (২০) ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ সকালে সিজার করার সময় নবজাতকের মাথার কয়েক জায়গায় কেটে ফেলেন নার্স চায়না বেগম। পরে নবজাতকের মাথায় ৯টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তবে নবজাতকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা যায়। পরে মা ও সন্তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ না থাকলেও এর আগে ৫০ থেকে ১০০ জন গর্ভবতী নারীর সিজার ও ডেলিভারি করান নার্স চায়না বেগম।
চায়না বেগম অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তবে স্থানীয় প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে কোনো সনদ দেখাতে পারেন নি।
একজন নার্স কোনো প্রসূতি মাকে সিজার করতে পারেন কি-না এ নিয়ে ফরিদপুরে আলোচনার ঝড় বইছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, স্বাভাবিক ডেলিভারি হতে পারত। তবে, ওটি চার্জ পাওয়ার লোভে গর্ভবতীকে সিজার করার জন্য তড়িঘড়ি করেন ওই নার্স। কিন্তু, আমরা জানতাম ডাক্তার সিজার করবে। তবে ওই নার্স যে সিজার করবে তা জানা ছিল না। আমরা ওই নার্স ও হাসপাতাল মালিকের বিচার চাই।
পরে খবর পেয়ে প্রাইভেট হাসপাতালটিতে পরিদর্শন করেছেন ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুল আলম, জেলা স্বাচিবের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. আব্দুল জলিল।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “এ হাসপাতালে এরকম অনিয়ম হয় তা জানা ছিল না। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএ জলিল বলেন, “সিজার করার অভিযোগ হাসপাতাল মালিক পলাশ মোল্যা (৪৫) ও নার্স চায়না বেগমকে (৩৫) আটক করেছে পুলিশ। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ করছে।”
