নওগাঁর আত্রাইয়ে এক প্রবাসীর বাড়িতে অর্ধশতাধিক মৌমাছির চাক রয়েছে। দোতলা বাড়িটির কার্নিশ, বারান্দা, দরজার প্রধান ফটকসহ প্রায় সব জায়গায় বাসা বেঁধেছে মৌমাছি। এমনকি বাড়িটির আশপাশের থাকা গাছেও বাসা বেঁধেছে মৌমাছি।
বাড়িটি উপজেলার আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের কাজী পাড়া গ্রামে। বাড়িটি বেশ কয়েকবছর আগে তৈরি করা হলেও প্রায় নয় বছর ধরে বাড়িটিতে মৌমাছির আনাগোনা। বাড়িটি এখন যেন মৌমাছির অভয়াশ্রম। বাড়িটির মালিক প্রবাসী মো. আব্দুল কুদ্দুস তার স্ত্রী এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তিনি বাড়িতে থাকেন।
বাড়ির মালিকের স্ত্রী জানান, এই মৌমাছি আমাদের চাষ করা না, এরা নিজেরাই আমার এই বাড়িতে তার আসে। তবে শীতকালে মৌমাছির চাকের পরিমাণ বেশি থাকে, গরম কালে কিছু কম থাকে। এগুলো আমাদের পরিবারের বাচ্চা বা অন্য কারো কোন ক্ষতি করে না। তাদের দেখে খুব আনন্দ পাই। অনেক দূর থেকে ও লোকজন দেখতে আসে।
একই গ্রামের মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, “আমরা সবসময় ওই বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে মিলে যাওয়া আসা করি। কিন্তু মৌমাছি কখনোই আমাদের কামড়ায় না।”
কাজী পাড়া গ্রামের মো. শাহজাহান আলী বলেন, “এই বাড়িটি তৈরি করার আগে এখানে একটি জাম গাছ ছিল। সেখান থেকে এই মৌচাকের আবির্ভাব। তারপর এই বাড়ি তৈরি হলে কমবেশি সারা বছর মৌচাক বাসা বেঁধে থাকে।”
মৌচাক দেখতে আসা মো. মোজাম্মেল জানান, মৌমাছিগুলো খুবই শান্ত প্রকৃতির। গত ৮ বছর ধরে শীতের শেষে তারা এখানে আসে। আমরা তাদের অতিথি মনে করি। ওরাও আমাদের ক্ষতি করে না।”
স্থানীয়রা জানান, গত ৮ বছর ধরে আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতে এভাবেই বাসা বেঁধে আছে মৌমাছি। প্রতি বছর শীত এলেই মৌচাকের সংখ্যা বেড়ে যায়। তবে এবারের মত এতগুলো মৌচাক আগে দেখা যায়নি। এ সকল মৌমাছিগুলো কারো কোন ক্ষতি করে না।
উপজেলা কৃষি অফিসার কে এম কাওছার হোসেন বলেন, “প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন গাছে মৌমাছি বাসা বাঁধতে আকৃষ্ট হয়। তবে ইদানীং বিভিন্ন গাছ পালার পাশাপাশি দালান বাড়িতে ও মৌমাছির বাসা বাঁধার কথা শোনা যাচ্ছে। তবে তারা কেন স্থান পরিবর্তন করে বাসা বাঁধতে শুরু করেছে এ বিষয়ে জানতে গবেষণা চলছে।”
বাড়ির মালিকের বড় ভাই আবু বক্কর বলেন, “৮ বছর আগে প্রথমে ১০ থেকে ১৫ টি মৌচাক ছিল। এখন বাড়িতে পঞ্চাশের বেশি মৌচাক বসেছে। আর এই মৌমাছি দেখতে মানুষ ভিড় জমায় বাড়িতে।”