• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

রাজশাহী নগরীতে বেড়েছে অপরাধ


এম এম মামুন, রাজশাহী
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩, ০৯:১০ এএম
রাজশাহী নগরীতে বেড়েছে অপরাধ

রাজশাহী নগরীতে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে চুরি, ছিনতাই ও নানা ধরনের অপরাধ প্রবণতা। প্রতিদিনই নগরীর কোথাও না কোথায় ছুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এরই মধ্যে রাজশাহীতে একদিনেই মাত্র ৬ ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি খুনের ঘটনাও ঘটেছে। যদিও পুলিশ বলছে, এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে নিয়মিত কাজ করছে। অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক রয়েছে। তবে হঠাৎ চুরি, ছিনতাই বৃদ্ধি ও খুনের ঘটনা সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে।

সর্বশেষ ২ ফেব্রুয়ারি চোর সন্দেহে দুই নির্মাণ শ্রমিককে বাড়িতে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতনের পর পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। মহানগরীর সপুরাস্থ বিসিক শিল্প নগরীর বিশাল বিস্কুট ফ্যাক্টরির সামনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুই নির্মাণ শ্রমিকের মধ্যে একজনের নাম রাজু ওরফে রাকিব (৪২) ও অন্যজন রেজাউল করিম ওরফে আতাউর (৪৫)।

রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজারুল ইসলাম জানান, একটি খাদ্য পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানির মালিকের বাড়িতে দুই নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলাও হয়েছে।

একই দিন নগরীর চন্দ্রিমা থানা এলাকায় কাজেম আলী বিদ্যুৎ (৪০) নামের এক ডিস ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা হত্যা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় পুলিশ মূলহোতাসহ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।

শুধু এ তিনটি খুনের ঘটনায় নয়,  এক সপ্তাহে রাজশাহী নগরীতে বেশ কয়েকটি চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে বেড়েছে ছিচকে চোরের উৎপাত। ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীর উপশহর এলাকায় স্কুল শিক্ষক মনিরুল ইসলামের ভাড়া বাড়ির দোতলার ভেন্টিলেটর ভেঙ্গে ছুরির ঘটনা ঘটেছে। মনিরুল ইসলাম জানান, রান্না ঘরের ভেন্টিলেটরের ভেতর দিয়ে চোর ভেতরে ঢুকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় তিনি নগরীর বোয়ালিয়া থানায় অভিযোগ করেছেন।

এছাড়া নগরী মহিষবাথান এলাকায় কয়েকদিনে একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। নগরীর মহিষবাথানের কারিতাস মোড়ের গলিতে চারদিন ধরে একই স্থানে অন্তত চারটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। রিকশা আরোহীর কাছ থেকে মোটরসাইকেলে এসে ব্যাগ মোবাইল ছিনতাই করা হয়েছে। ঝামেলা এড়াতে এসব ছিনতাইয়ের ঘটনায় অনেকে থানায় অবহিত করতে রাজি হচ্ছেন না। তবে এ নিয়ে এলাকাবাসী ছিনতাই শঙ্কায় রয়েছে।

এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সহপাঠীর স্ট্যাটাসে ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট দেওয়ায় এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। রাজশাহী কলেজ মাঠে এই ঘটনা ঘটে।

এর আগে জানুয়ারির শেষে মোবাইল ফোন ছিনতাই করে পালানোর সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দুই ছিনতাইকারীকে হাতেনাতে আটক গণধোলাই দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদারবক্স হলের পাশে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছিনতাইকারীদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি নগরীর তালাইমারী এলাকায় ঘুরতে এসে ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন এক রাবি ছাত্র। ছিনতাইকারীরা তার ওপর হামলা চালিয়ে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে পালিয়ে যান।

পুলিশ এসব ঘটনা বিচ্ছিন্ন বললেও সাধারণ মানুষ বলছেন, হঠাৎ করেই রাজশাহী নগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে।

রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, সম্প্রতি রাজশাহীতে ছুরি ছিনতাইয়ের খবর আসছে। এসব প্রতিরোধে পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে হবে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও সহকারী কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। লোকবল বাড়ানো হয়েছে। গাড়ির সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। যে কোনো অপরাধ দমনে পুলিশ নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।

Link copied!