কুড়িগ্রামে সাত বছরের শিশু চম্পা হত্যা মামলার প্রধান আসামি মিন্টু বসুনিয়া ও তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১১ অক্টোবর) রাতে গাজীপুর থেকে ওই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বাড়ি উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের গনকপাড়া গ্রামে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকালে তাদের কুড়িগ্রাম আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় উলিপুর থানা-পুলিশ।
জানা গেছে, ২০১৩ সালে উলিপুর থানার দলদলিয়া ইউনিয়নের গনকপাড়া গ্রামের মিন্টু বসুনিয়ার সঙ্গে একই গ্রামের বজরুলের কথা কাটাকাটি হয়। ওই সময় মিন্টু বসুনিয়া ও তার ভাই চাঁদ মিয়া মিলে বজরুলকে মারধর করেন। এতে বজরুল গুরুতর আহত হন ও তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর মধ্যে গুজব সৃষ্টি হয় যে বজরুল মারা গেছেন।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনার দায় থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্য এবং প্রতিপক্ষকে পাল্টা মামলায় ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মিন্টু বসুনিয়া ও তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম মিলে আপন ভাতিজি, অর্থাৎ চাঁদ মিয়ার শিশু কন্যা চম্পাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা বাঁশঝাড়ে লাশ ফেলে রাখেন। এ ঘটনায় মামলা হয় প্রতিপক্ষ বজরুল পরিবারের বিরুদ্ধে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উলিপুর থানার তৎকালীন পরিদর্শক তদন্ত মো. জাকির উল ইসলাম চৌধুরী মামলাটির তদন্তে নামেন। তদন্তের একপর্যায়ে মিন্টু বসুনিয়াকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সত্য ঘটনা উদঘাটিত হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মিন্টু বসুনিয়াকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা বজরুলকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে মিন্টু বসুনিয়া ও তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগমের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে আত্মগোপনে চলে যান।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রুহুল আমীন বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। আসামি প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেছেন। ২০১৩ সালের শিশু হত্যা মামলার মূল হোতা দম্পতিকে ১১ বছর পলাতক থাকার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে।