• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মুহররম ১৪৪৫

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে হত্যা


নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২৪, ০৯:০১ এএম
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে হত্যা
নরসিংদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে হত্যা। ছবি: প্রতিনিধি

নরসিংদীতে এক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার সঙ্গে থাকা আরও দুজন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৮ মে) রাত সাড়ে ১২টায় মাধবদী থানার ভগিরথপুর এলাকার শাহী ঈদগাহ সামনে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

নিহত সাবেক চেয়ারম্যানের নাম মাহাবুবুল হাসান (৪০)। সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ভগিরথপুর এলাকার আমিন উদ্দিনের ছেলে এবং মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনেরা জানান, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার রাতে ভগিরথপুর মাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যান মাহাবুবুল। সেখান থেকে ৮–১০ জন দলীয় নেতা–কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। পথে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আজহার অমিত প্রান্তের মালিকানাধীন ওবায়দুল্লাহ টেক্সটাইলের সামনে পৌঁছালে ৭–৮ জন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত মাহবুব হাসানসহ তার সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর হামলা করে।

এ সময় গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাহবুবুল হাসান, সাঈদ হাসান পাপ্পু (৩৮) ও ফরহাদ মিয়া (৪০) নামে তিনজন আহত হন।

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহবুবুল হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এদিকে খবর পেয়ে সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন নিহতের স্বজন, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা–কর্মীসহ জনপ্রতিনিধিরা। রাজনৈতিক পূর্ব বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি কর্মী সমর্থক ও স্বজনেরা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক দাবি জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী রবিন মিয়া বলেন, দলীয় কার্যালয় থেকে সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসানসহ আমরা বাড়ি ফিরছিলাম। এ সময় সামনে থাকা বালু ট্রাকের আড়াল হতে ৭–৮ জন অস্ত্রধারী হঠাৎ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মাহবুবকে কোপাতে থাকে। তার সঙ্গে থাকা লোকজন তাকে বাঁচাতে গেলে তাদের ওপরও হামলা করে।

রাজনৈতিক বিরোধের কারণে ও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণে এ হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

নিহতের ছোট ভাই হাফেজ মোহাম্মদ অলিউল্লাহ বলেন, ‘আমার ভাই সাধারণ জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করতো। মাদক ব্যবসা, অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে সবসময় প্রতিবাদী ছিলেন। এসব কারণে খারাপ লোকজন কোণঠাসা থাকতো। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমার ভাই যে পক্ষে কাজ করেছে তারা বিজয়ী হয়েছে। এ হিংসার জেরে পরাজিত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে।’

নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মাহমুদুল কবীর বাশার বলেন, ‘রাত পৌনে ১টার দিকে মেহেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহবুবুল হাসানসহ তিনজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। মাহবুব হাসানের মাথার পেছনে ঘাড়ে বড় ক্ষতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। গুলির বিষয়ে ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সাঈদ হাসান পাপ্পু ও ফরহাদ মিয়া নামে আরও দুজনকে আহতাবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’

নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ সদর হাসপাতালে গিয়ে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাটি মাধবদী থানায় হওয়ায় তদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানাবেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান হত্যার পর পুলিশ ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি অপরাধীদের ধরতে তৎপরতা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

Link copied!