• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তি চরমে


চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২৩, ১১:২৭ এএম
চট্টগ্রাম নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তি চরমে

টানা বর্ষণ ও পূর্ণিমার অস্বাভাবিক জোয়ারে টানা তৃতীয় দিনের মতো জলাবদ্ধতার কবলে চট্টগ্রাম নগর। এরই মধ্যে নগরের অন্তত ৪০ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট, অলিগলি ও বসতঘর পানিতে ডুবে থাকায় নগরের অন্তত ১৫ লাখ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। ক্ষতির মুখে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরাও।

ভারী বর্ষণে শুক্রবার ভোর থেকে নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা শুরু হয়। জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকার একটি ছিল নগরের চকবাজারের কাঁচাবাজার এলাকা। শুক্রবার থেকে এই এলাকার চক সুপার মার্কেট বন্ধ রয়েছে। গতকালও খোলেনি।

চক সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা বেলাল উদ্দিন জানান, তাদের বিপণিবিতানের নিচতলায় পোশাক, প্রসাধন সামগ্রী, ক্রোকারিজ, মুঠোফোনের ৫৫টি দোকান রয়েছে। প্রথম দিন অন্তত ৩০টি দোকানের প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে। আবার পানির কারণে তিন দিন ধরে বিপণিবিতান বন্ধ।

নগরের ওয়াই ডব্লিউ সি এ প্রাইমারি স্কুল, এখলাছুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাপাসগোলা সরকারি প্রাথমিক বালক বিদ্যালয়সহ ছয়টি স্কুলের নিচতলা ডুবেছে।

জলাবদ্ধতায় এবার ডুবেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর এলাকা বহদ্দারহাটও। এই এলাকার স্বজন সুপার মার্কেটের নিচতলা গত তিন দিনই পানিতে ডুবে ছিল। ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. দেলাওয়ার হোসেন বলেন, মার্কেটের নিচতলায় বিভিন্ন পণ্যের প্রায় ১০০ দোকান রয়েছে। তিন দিনের জলাবদ্ধতায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির চট্টগ্রাম শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, প্রতিবছরই জলাবদ্ধতার কারণে ব্যবসায়ীরা নানাভাবে ক্ষতির শিকার হন। প্রথমত দোকানের জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যায়। এরপর জলাবদ্ধতার সময় ব্যবসা বন্ধ থাকে। এবার প্রায় পাঁচ হাজার দোকানি জলাবদ্ধতার শিকার হন।

জলাবদ্ধতার কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েন নিচু এলাকার বাসিন্দারা। তাদের ঘরের নিচতলা পানিতে তলিয়ে যায়। ভারী বৃষ্টি হলে প্রথমেই ডোবে চকবাজার।

এই এলাকার গৃহিণী রোকসানা আক্তারের ঘরে পানি জমে ছিল। পানি থেকে রক্ষায় ফ্রিজ রেখেছেন বড় টুলের ওপর। তিনি বসে ছিলেন আরেকটি টুলের ওপর। তিনি বলেন, তিন দিন ধরে পানি ঘরে। এর মধ্যে রান্না করতে হচ্ছে।

কাল চট্টগ্রাম নগরের প্রধান সড়ক মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার হাঁটুপানিতে ডুবে ছিল। সড়কটিতে কার্যত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শুধু সিডিএ অ্যাভিনিউ নয়, নগরের কাপাসগোলা, কে বি আমান আলী সড়ক, সিরাজদ্দৌলাহ সড়ক, খাজা সড়কসহ বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বিকেল পর্যন্ত কার্যত বন্ধ ছিল।

নগরের ওয়াই ডব্লিউ সি এ প্রাইমারি স্কুল, এখলাছুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাপাসগোলা সরকারি প্রাথমিক বালক বিদ্যালয়সহ ছয়টি স্কুলের নিচতলা ডুবেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার বেলা তিনটা থেকে গতকাল বেলা তিনটা) চট্টগ্রামে ২৩১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারী বর্ষণের পাশাপাশি জোয়ারের উচ্চতাও ছিল বেশি। চট্টগ্রাম বন্দরের হিসাবে গতকাল সদরঘাট এলাকায় ভোরের সময় কর্ণফুলী নদীতে জোয়ারের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে দশমিক ৫০ মিটার বেশি ছিল। জোয়ারের উচ্চতা ছিল ৫ দশমিক ১৬ মিটার। বিকেলে জোয়ারের উচ্চতা ছিল ৫ দশমিক ১১ মিটার।

Link copied!