• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় ১৫০ রোহিঙ্গা উদ্ধার


কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৩, ১১:০৯ এএম
সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় ১৫০ রোহিঙ্গা উদ্ধার

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূল থেকে সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি ট্রলার উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সকালে টেকনাফের সমুদ্র উপকূলে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি ট্রলার ভাসতে দেখে স্থানীয় বাংলাদেশি জেলেরা ট্রলারটি আটকে রাখে।

ট্রলারে শিশু ও নারীসহ ১৫০ রোহিঙ্গা ছিল বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। ট্রলারটি সাগরে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে তিন দিন ধরে সাগরে ভাসমান অবস্থায় ছিল।

পরে দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলেরা সাগরে ভাসমান ট্রলারকে টেনে টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের পাশে সৈকতে মহেষখালী পাড়া ঘাটে নিয়ে আসে পুলিশ ও কোস্ট গার্ডকে খবর দেয়। ইতোমধ্যে ট্রলারে থাকা রোহিঙ্গা শিশু ও মহিলারা কান্নাকাটি করে ট্রলার থেকে নেমে পড়ে। পুলিশ ও কোস্টগার্ড দল আসার আগেই ট্রলার থেকে নামা রোহিঙ্গারা সটকে পড়ে। তবে স্থানীয় দালালরা অনেকে জোরপূর্বক পাহাড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ রোহিঙ্গাদের।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে টেকনাফ মহেশখালী পাড়ার ইউপি সদস্য জহির আহমদ বলেন, সাগরে যাত্রীবাহী একটি মালয়েশিয়াগামী ট্রলার ভাসমান দেখে জেলেরা টেনে কূলে নিয়ে আসেন। ট্রলারে দেড়শ মতো যাত্রী ছিল। সবাই বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বসবাসকারী। এদের মধ্য বেশির ভাগই নারী ও শিশু ছিল। ঘাটে ওই ট্রলারটি এখনও ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। তবে রোহিঙ্গারা যে যার মতো চলে গেছেন। বিষয়টি আমি প্রশাসন অবহিত করেছি।

কথা হয় ট্রালার থেকে নেমে মেরিন ড্রাইভে বসে থাকা হামিদ হোসেনের সঙ্গে। এসময় তার পাশে সাত শিশুসহ পাঁচ নারী বসে কান্নাকাটি করছিল। তারা সবাই উখিয়া বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।

হামিদ হোসন বলেন, ক্যাম্পের পরিস্থিতি খুব খারাপ। প্রতিদিন খুনাখুনি হচ্ছে। সে কারণে ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে উন্নত জীবনের আশায় সাগরপথে মালয়েশিয়া পাড়ি দিচ্ছিলাম। আমরা ট্রলারে প্রায় দেড়শ জন ছিলাম। সেখানে আমার শিশু সন্তানসহ ৬ জন পরিবারের সদস্য আছে।

তার ভাষ্য মতে, ক্যাম্পে আমরা জীবন রক্ষার জন্য সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। প্রথমে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে দালালদের মাধ্যমে টেকনাফের একটি পাহাড়ে ৫ দিন ছিলাম। সেখান থেকে ছোট নৌকা নিয়ে সাগরে থাকা এ ট্রলারে উঠি। ট্রলারে আমার মতো অনেকে ছিল। এরপর মাঝিরা ইন্দোনেশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সাগরে তিন দিন ঘুরাঘুরি করে। এক পর্যায়ে কূলের কাছকাছি এসে মাঝিমল্লারা ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ছোট নৌকায় দু’টি আমাদের ট্রলারটি টেনে কূলে নিয়ে আসেন। মূলত আমরা মালেশিয়ার উদ্দেশে ইন্দোনেশিয়া যাত্রা করেছিলাম।

জানতে চাইলে টেকনাফ থানার ওসি মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, সাগরপথে মালয়েশিয়াগামী একটি যাত্রীবাহী ট্রলার টেকনাফস্থ কূলে ফিরে আসার খবর শুনেছি। তবে বিষয়টি কোস্ট গার্ড দেখছেন।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ কোস্ট গার্ডের স্টেশন কর্মকর্তা লে. কমান্ডার সোলেমান কবির জানান, এ ধরনের একটি সংবাদ আমরা পেয়েছি। ঘটনাস্থলে যাত্রীবিহীন ট্রলারে সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।

Link copied!