• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

দেশে বড় ধরনের সাইবার হামলার হুমকি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২৩, ০৮:০৩ পিএম
দেশে বড় ধরনের সাইবার হামলার হুমকি
প্রতীকী ছবি

দেশে বড় ধরনের সাইবার হামলা হতে পারে। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে ঘিরে এই হামলা হতে পারে বলে জানিয়েছে কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম বা সার্ট ।

ভারতীয় একদল হ্যাকার এ হুমকী দিয়েছে। হুমকির পর দেশজুড়ে সতর্কতা জারি করেছে সার্ট। তবে সতর্কতা আসার আগেই দিনাজপুর পুলিশের একটি ওয়েবসাইট হ্যাকাররা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে শনিবার (৫আগস্ট)।

সংস্থাটির সূত্রে জানা গেছে, ‘হ্যাকটিভিস্ট নামের ওই হ্যাকার গ্রুপটি ধর্মীয় উগ্রবাদে বিশ্বাসী। মূলত বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে উদ্দেশ্য করে তারা এ হুমকি দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৫ই অগাস্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের দিনটিতে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আবার দিনটি ভারতের স্বাধীনতা দিবসও। তবে হ্যাকাররা এসব প্রসঙ্গ তাদের হুমকি সম্বলিত বার্তাগুলোতে উল্লেখ করেনি।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেছেন, সার্ট সতর্কতা জারি করে ভালো করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোকে এখন নজরদারির আওতায় এনে হামলা ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর জোহা বলছেন সার্টের উচিত একই ধরণের আন্ত:রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে সেগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া।

এদিকে পুলিশ বলছে, তারা সতর্ক আছেন এবং আইটি ও সাইবার টিমগুলোতে উচ্চ প্রশিক্ষিত বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা সহায়তা করেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, হ্যাকারদের চিহ্নিত করতে কাজ চলছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি বিশ্বের বড় সাইবার হামলাজনিত অপরাধের একটি বড় উদাহরণ।

এছাড়া সম্প্রতি সরকারি দুটি দপ্তরের সংরক্ষিত তথ্য ফাঁস হয়েছে বাংলাদেশ থেকে, যার মধ্যে ছিলো কোটি কোটি নাগরিকের নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল বা আবাসিক ঠিকানা, জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন নম্বরের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

সাইবার হামলা কি:

সাইবার হামলা হলো বাইরে থেকে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটসহ অনলাইন ডেটাবেজে অনধিকার প্রবেশ। এর ফলে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতি, তথ্য বিকৃতি কিংবা স্পর্শকাতর তথ্য হাতছাড়া হয়ে যাওয়া।

হ্যাকার কারা:

সার্টের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে টার্গেট করে যে হ্যাকাররা হুমকি দিয়েছে তাদের গ্রুপটির নাম ‘হ্যাকটিভিস্ট’। কিন্তু হ্যাকাররা কেন এ হামলা করবে? তাদের কোনো দাবি বা মোটিভ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়নি।

সার্ট জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই কয়েকটি হ্যাকার দলকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা একই ভাবাদর্শের। এরা বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় সাইবার আক্রমণ করে আসছে। এসব বিষয়ে যারা কাজ করেন তাদের কারও কারও ধারণা ১৫ই অগাস্ট বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন এবং সে দিনটি হয়তো নিজেদের গুরুত্ব প্রকাশ করতে বেছে নিয়েছে হ্যাকার গ্রুপ।

ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলছেন, হ্যাকাররা যে কোনো সময়েই এটি করতে পারে এবং যাদের কথা বলা হচ্ছে, তারা ১৫ই অগাস্টের কথা কেন বলেছে সেটি তার বোধগম্য নয়।

সার্টের তথ্য অনুযায়ী, হ্যাকটিভিস্টের পক্ষ থেকে বার্তাটি আসে ৩১শে জুলাই। সেখানে তারা বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে ১৫ই অগাস্ট ‘সাইবার হামলার ঝড় বইয়ে দেয়ার’ হুমকি দেয়। এ বার্তার একটি ছবিও বিজ্ঞপ্তির সাথে জুড়ে দিয়েছে সার্ট। এ অবস্থায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানান সার্ট।

এরই মধ্যে ১ অগাস্ট হ্যাকার গ্রুপ বাংলাদেশে পেমেন্ট গেটওয়ে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও ব্যাংক খাতে সাইবার আক্রমণের দাবিও করেছে। এর আগে ২৭শে জুন একটি কলেজের ওয়েবসাইট ও ২৪শে জুন স্বাস্থ্য খাতের একটি ওয়েবসাইট নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পেরেছিলো হ্যাকাররা।

আরও জানা গেছে, দিনাজপুর পুলিশের একটি ওয়েবসাইট অন্যদের নিয়ন্ত্রণে আছে ৪ অগাস্ট থেকে। তবে এসব আক্রমণের সাথে ১৫ই অগাস্টে সাইবার হামলার হুমকিদাতা হ্যাকারদের যোগসূত্র আছে কি-না তা এখনও জানা যায়নি।

করণীয় কী:

সার্ট সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাইবার হামলার হুমকি মোকাবেলায় কিছু পরামর্শ দিয়েছে, যার মধ্যে আছে নেটওয়ার্ক অবকাঠামো সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা এবং ক্ষতিকর হতে পারে এমন অনুরোধ ও ট্রাফিক প্যাটার্ন ফিল্টার করা।

নজর রাখতে হবে ব্যবহারকারীদের ওপরও। পাশাপাশি সম্ভাব্য সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ছাড়াও সন্দেহজনক কোনো কিছু দৃষ্টিগোচর হলে সার্টকে জানাতে বলা হয়েছে।

একই সাথে ডিএনএস, এনটিপি এবং নেটওয়ার্ক মিডলবক্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা সুরক্ষিত রাখার পরামর্শ দিয়েছে সার্ট। তথ্যসূত্র-বিবিসি বাংলা।

Link copied!