বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “রাষ্ট্র সংস্কারের আলোচনার তর্কবিতর্ক হতাশা তৈরি করেছে। গণতন্ত্রে তর্কবিতর্ক থাকবেই। তবে মাঝেমধ্যে তা হতাশার জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছে।”
শনিবার (২৩ আগস্ট) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সামাজিক সুরক্ষা কতটা সুরক্ষিত?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ক্ষতিগ্রস্ত নেতা-কর্মীদের সংগঠন অর্পণ আলোক সংঘ এ সভার আয়োজন করে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি আশাবাদী, হতাশ হতে চাই না। তবে তারপরও হতাশ হতে হচ্ছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমি যখন একটা প্রগতিবাদী সমাজ দেখতে চাই, যখন একটা মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য একটা সুষ্ঠু ব্যবস্থা চাই, আমি যখন জনগণের বৈষম্য কমিয়ে আনতে চাই...তখন যদি দেখি যে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে ভিন্ন চিন্তা করা হচ্ছে, সেটাকে ডাইভার্ট করার চেষ্টা হচ্ছে, মানুষের চিন্তা ভাবনাগুলোকে এবং একটা উগ্রবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, তখন তো হতাশা আসবেই।”
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে রাষ্ট্রকাঠামোয় সংস্কার আনার পরামর্শ দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বিচ্ছিন্নভাবে বা জোড়াতালি দিয়ে এসব সমস্যার সমাধান করা যাবে না। এ জন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট চিন্তা ও লক্ষ্য। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, কৃষি—কোনোটিই বিচ্ছিন্ন নয়। এ সবকিছুই রাষ্ট্রকাঠামোর ওপর নির্ভর করে। জনগণ কাদের নির্বাচিত করছেন; যাদের নির্বাচিত করছেন, তারা কীভাবে দেশকে পরিচালনা করছেন—এসব বিষয়ের ওপর নির্ভর করে।”
তিনি আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ দেশকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেড় বছরেই সেই ক্ষতি পূরণ হবে—এমনটা ভাবা যাবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংকটের পেছনে ভয়াবহ দুর্নীতি হলো অন্যতম কারণ। উপজেলা চেয়ারম্যানের কাজ নিয়ে নিয়েছেন সংসদ সদস্য, যেটা তার কাজ নয়। আইন প্রণয়নের বদলে তারা রাস্তা উন্নয়ন, ভবন উন্নয়ন, এমনকি গাড়ি কেনা হবে কিনা, সেটা নিয়ে কথা বলেছেন। রাষ্ট্রের সিস্টেমটাই হয়ে গেছে দখলের।
তিনি বলেন, “আমলারা সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ করছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দায়িত্বরত উপদেষ্টারাও অসহায় হয়ে পড়ছেন। একজন মফস্বলের শিক্ষককে সমস্যা সমাধানের জন্য ঢাকায় আসতে হয়। এটার তো প্রয়োজন ছিল না। এর জন্য দায়ী সিস্টেম। মফস্বলের শিক্ষক যদি সেন্ট্রালে না আসেন, তাহলে ঘুষটা আসবে কোথা থেকে? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ হয় ঘুষ দিয়ে, স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ হয় ঘুষ দিয়ে, নার্সদের নিয়োগ হয় ঘুষ দিয়ে।”