কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে স্বপ্নদীপ কুন্ডু (১৮) নামের এক ছাত্র মারা গেছেন। বুধবার (৯ আগস্ট) রাত পৌনে ১২টার দিকে হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে আহত হন তিনি। পরে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) ভোরে মারা যান।
আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, স্বপ্নদীপ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি রোববার হোস্টেলে এসে থাকতে শুরু করেছিলেন। স্বপ্নদীপ হোস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে শরীরে একাধিক আঘাত পেয়েছিলেন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এদিকে স্বপ্নদীপের পরিবার এ ঘটনায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ তোলে। স্বপ্নদীপের এক বন্ধু ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেছেন, তার বন্ধুর মৃত্যুর জন্য ‘কয়েকজন সিনিয়রের’ র্যাগিং দায়ী। কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন সিনিয়ররা স্বপ্নদীপকে নগ্ন হয়ে হোস্টেলের বারান্দায় দৌড়াতে বাধ্য করেছেন।
পুলিশ বলছে, বুধবার রাত ৯টার দিকে স্বপ্নদীপ তার মাকে ফোন করেন। তিনি ‘কিছু নিয়ে’ ভয় পাচ্ছিলেন বলে মাকে জানান। পরে তার ফোন বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ তার কল লিস্টের খোঁজ নিচ্ছে।
পুলিশ আরও জানায়, বুধবার রাত ১০টার দিকে স্বপ্নদীপ অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন রজত রায়কে এই ব্যাপারে জানিয়েছিল। তখন ডিন বলেন, পরদিন সকালে এই সমস্যা নিয়ে কথা বলবেন। পরে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে আবার শিক্ষার্থীরা ডিনের কাছে গেলেও কোনো সাড়া পায়নি।
এদিকে স্বপ্নদীপের মৃত্যুতে একটি হত্যা মামলা করেছেন তার বাবা রমাপ্রসাদ কুন্ডু। তবে মামলায় নির্দিষ্ট কারও নাম করে অভিযোগ করা হয়নি। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ১০-১৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বপ্নদীপের বাবাকে ফোন করে এ ঘটনায় দোষীদের যথাযথ বিচারের আশ্বাস দেন। গভর্নর সিভি আনন্দ বোস পদাধিকারবলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরও। তিনিও হোস্টেল পরিদর্শন করে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।