খুলনায় ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলার গল্লামারীতে মৎস্য বীজ উন্নয়ন খামার সম্মেলনকক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ইলিশের জন্য ২৪৭ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে সেমিনারে জানানো হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, “অতীতে এদেশের নদী-খালে প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর মাছ পাওয়া যেতে। এখন নদীতে তেমন মাছ পাওয়া যায় না। জলাভূমি দূষণ, দখল ও নির্বিচারে মাছ ধরে আমরা সে পরিস্থিতি নষ্ট করেছি। এমন কি নিজেদের স্বার্থে আমরা সুন্দরবনের বনজ ও মৎস্য সম্পদ ধ্বংস করে যাচ্ছি। দেশে ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ইলিশের ডিম ছাড়ার মৌসুমে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকে। সেই সময় সরকার জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয়। ইলিশ রক্ষায় সরকারের নির্দেশনা মেনে চললে দেশে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।”
সেমিনারে জানানো হয়, দেশের জিডিপিতে ইলিশের আবদান এক শতাংশের বেশি। বিশ্বে মোট আহরিত ইলিশের ৮০ শতাংশের বেশি বাংলাদেশে পাওয়া যায়, যার পরিমাণ বছরে সাড়ে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন। ইলিশ আহরণের সঙ্গে দেশের পাঁচ লাখ মানুষ সরাসরি এবং ২০ লাখের বেশি মানুষ পরোক্ষভাবে জড়িত। ইলিশের উৎপাদন ২০২৫ সাল নাগাদ ১৬ শতাংশ বৃদ্ধির পরিকল্পনা নিয়ে সরকার ২৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের ২৯ জেলার ১৩৪টি উপকূলীয় উপজেলায় ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
এর আওতায় খুলনার বটিয়াঘাটা, দিঘলিয়া, রূপসা, তেরখাদা ও দাকোপ উপজেলায় মোট ৪৫০ জন মৎস্যজীবীকে প্রশিক্ষণ ও ৭৫০ মৎস্যজীবীকে বিকল্প কর্মসংস্থানের উপকরণ দেওয়া হবে। এছাড়া ৪০টি সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক সভা ও ইলিশ রক্ষায় ৬২০টি অভিযান পরিচালনা করা হবে।
জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদারের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান। এসময় মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুদ দাইয়ান, মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের সাবেক উপপরিচালক প্রফুল্ল কুমার সরকার, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বক্তব্য দেন।
সেমিনারে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড কর্মকর্তা, মৎস্যজীবী, ট্রলার মালিক, মৎস্য ব্যবসায়ী ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।