চুল সৌন্দর্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সুন্দর, স্বাস্থ্যবান ও ঝলমলে চুল পেতে ভালো শ্যাম্পু বা তেল ব্যবহার করলেই হবে না, চুল আঁচড়ানোও গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস। অনেকেই জানেন না, দৈনিক কতবার চুল আঁচড়ানো উচিত এবং ঠিক কোন নিয়মে আঁচড়ানো হলে চুলের ক্ষতি হয় না। চলুন জেনে নিই, দৈনিক কতবার চুল আঁচড়ানোর দরকার এবং কীভাবে আঁচড়ানো উচিত।
চুল কেন আঁচড়ানো জরুরি
নিয়মিত চুল আঁচড়ানো হলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।
মাথার ত্বকে ব্রাশ বা চিরুনির চাপ পড়ায় সেখানকার রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। এতে চুলের গোড়ায় পুষ্টি পৌঁছে যায়, যা চুল গজাতে সাহায্য করে।
প্রাকৃতিক তেল সারা চুলে ছড়িয়ে পড়ে। মাথার ত্বক প্রাকৃতিকভাবে সেবাম নামক তেল তৈরি করে। চুল আঁচড়ালে এই তেল পুরো চুলে সমভাবে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে চুল হয়ে ওঠে মসৃণ ও ঝলমলে।
ময়লা ও ধুলোবালি দূর হয়। নিয়মিত চুল আঁচড়ালে ধুলো, মৃত চামড়া, অথবা চুলে জমে থাকা অবাঞ্ছিত উপাদানগুলো দূর হয়।
গোছালো ও জটমুক্ত চুল পাওয়া যায়। চুল না আঁচড়ালে জট বাঁধে, যা পরে আঁচড়াতে গিয়ে চুল ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই নিয়মিত আঁচড়ানো চুলকে জটমুক্ত ও গোছালো রাখে।
দৈনিক কতবার চুল আঁচড়ানো উচিত
সাধারণভাবে দিনে ২ বার চুল আঁচড়ানো যথেষ্ট। একবার সকালে এবং একবার রাতে ঘুমানোর আগে। তবে এটি নির্ভর করে চুলের ধরন, দৈর্ঘ্য এবং দৈনন্দিন অভ্যাসের উপর।
ঘুমের পরে চুল একটু এলোমেলো হয়ে যায়। তাই সকালে উঠে হালকা হাতে চুল আঁচড়ানো প্রয়োজন। এটি চুলকে গোছালো করে এবং দিনের শুরুতে চুল সুন্দর দেখায়।
সারাদিনের ধুলোবালি, ঘাম এবং বাতাসে উড়ে আসা কণা চুলে জমে থাকে। রাতে ঘুমানোর আগে চুল ভালোভাবে আঁচড়ালে সেসব অপসারণ হয় এবং মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। এটি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক।
যদি চুল খুব লম্বা, কোঁকড়া বা সহজেই জট বাঁধে তাহলে দিনে একাধিকবার আঁচড়ানো যেতে পারে। তবে খুব ঘন ঘন বা শক্তভাবে আঁচড়ানো চুলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
অতিরিক্ত চুল আঁচড়ানোর ক্ষতি
অনেকে মনে করেন, যত বেশি আঁচড়ানো হবে, তত চুল ভালো থাকবে। কিন্তু এটি ভুল ধারণা। অতিরিক্ত বা জোরে আঁচড়ালে চুলের গোঁড়া দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে চুল ভেঙে যাওয়া, চুল পড়া এবং স্ক্যাল্পে জ্বালা অনুভব হতে পারে।
কীভাবে চুল আঁচড়াবেন
ভেজা চুলে ধীরে আঁচড়ান। চুল ভেজা অবস্থায় সবচেয়ে বেশি নরম থাকে, তখন জোরে আঁচড়ালে চুল ছিঁড়ে যেতে পারে। তাই ধীরে ধীরে নিচ থেকে ওপরের দিকে আঁচড়ান।
জট বাঁধলে ধৈর্য ধরুন। জট বাঁধা চুল জোরে টেনে আঁচড়াবেন না। হালকা হাতে ধীরে ধীরে আলাদা করে চুল গোছান।
ভালো মানের, প্রশস্ত দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন। প্লাস্টিক চিরুনি তুলনায় কাঠ বা সিলিকনের চিরুনি কম স্ট্যাটিক বিদ্যুৎ তৈরি করে। যা চুলের স্বাস্থ্য ভালো করে।