২০৩০ সালের মধ্যেই বে-টার্মিনাল চালু: বন্দর চেয়ারম্যান

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৫, ০৯:২২ এএম

২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল চালু করার আশা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বন্দরের শহীদ মো. ফজলুর রহমান অডিটোরিয়ামে বে-টার্মিনাল প্রকল্প সম্পর্কিত এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।

‘জেনারেল মার্কেট এনগেজমেন্ট কনফারেন্স ফর দ্য বে-টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে রিয়ার অ্যাডমিরাল মনিরুজ্জামান বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে বে-টার্মিনালের টার্মিনাল-ওয়ান চালু করা। যদি আগামী বছরের মাঝামাঝিতে কাজ শুরু করতে পারি, তবে এ সময়সীমার মধ্যে অপারেশন শুরু করা সম্ভব হবে বলে আমি আশাবাদী।”

তিনি আরও বলেন, “বে-টার্মিনাল প্রকল্পের প্রতিটি ধাপ পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) গাইডলাইনের শতভাগ নিয়ম মেনে পরিচালিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে দারুণ অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আমরা একটি সফল উদাহরণ উপস্থাপন করতে পারব।”

সভায় বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি চিক ডায়ালোসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১২৭ জন প্রতিনিধি সরাসরি ও অনলাইনে অংশ নেন। যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, চীন, ভারত ও তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশের সুপরিচিত কোম্পানির কর্মকর্তারা এতে মতামত প্রদান করেন।

বন্দরের সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর কাউসার রশিদ সভায় বে-টার্মিনাল প্রকল্পের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব তুলে ধরেন। অন্যদিকে প্রকল্প পরিচালক কমোডর মো. মাহফুজুর রহমান ব্রেকওয়াটার নির্মাণ, চ্যানেল ড্রেজিং ও ন্যাভিগেশন যন্ত্রপাতি স্থাপনসহ মেরিন অবকাঠামো বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক ব্যাখ্যা করেন।

রিয়ার অ্যাডমিরাল মনিরুজ্জামান বলেন, “বে-টার্মিনাল আগামী ১০০ বছরের বাণিজ্যিক চাহিদাকে মাথায় রেখে নির্মিত হবে। এটি দেশের অর্থনীতির জন্য গেম চেঞ্জার হবে এবং চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতাকে বিশ্বমানের পর্যায়ে নিয়ে যাবে। বে-টার্মিনালের মাধ্যমে রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আসবে, পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মুক্ত হবে।”

তিনি আরও জানান, “নতুন মাল্টিপারপাস টার্মিনালে কনটেইনার ও সাধারণ কার্গো—দুই ধরনের জাহাজই হ্যান্ডল করা যাবে। ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে গিয়ারলেস ভ্যাসেল অপারেশনের সুযোগ রাখা হচ্ছে, যাতে পূর্ণ দক্ষতা বজায় থাকে।”

চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের প্রতিটি প্রকল্পে ওয়ার্ল্ড-ক্লাস পরামর্শক সংস্থা কাজ করছে—মার্কেট অ্যানালাইসিস থেকে শুরু করে ফিনান্সিয়াল, সামাজিক ও পরিবেশগত দিক পর্যন্ত সবকিছু যাচাই করা হচ্ছে। আমরা এমন একটি টেকসই প্রকল্প নির্মাণ করতে চাই, যা শতবর্ষ পরও দেশের গর্ব হয়ে থাকবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “বে-টার্মিনাল সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ ইউরোপে সরাসরি জাহাজ পাঠাতে পারবে। এর ফলে বাংলাদেশ একটি রিজিওনাল ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে পরিণত হবে। ইতিমধ্যে বিশ্বের বড় বড় বিনিয়োগকারী কোম্পানিগুলো আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বর্তমানে বে-টার্মিনাল না থাকায় প্রতিদিন প্রায় এক মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছে—এ টার্মিনাল চালু হলে সেই ক্ষতি কয়েক বছরের মধ্যেই পুষিয়ে আসবে।”