একজন গ্রাহক জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সর্বোচ্চ ১০টি মোবাইল সিম ব্যবহার করতে পারবেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমানে যাদের অতিরিক্ত সিম নিবন্ধিত আছে, তাদের অতিরিক্ত সিমগুলো ধাপে ধাপে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হবে। তবে বন্ধ করার আগে নিজের অপ্রয়োজনীয় সিমের নিবন্ধন বাতিল করার সুযোগ পাবেন গ্রাহকরা। আগামী নভেম্বরের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বিটিআরসির হিসেবে দেখা গেছে, নতুন সীমা চালু হলে প্রায় ২৬ লাখ গ্রাহকের নামে থাকা ৬৭ লাখ অতিরিক্ত সিম বন্ধ করতে হবে। এ জন্য বিটিআরসি মোবাইল অপারেটরদের একটি তালিকা দেবে, যেখানে প্রত্যেক গ্রাহকের নামে কতটি সিম রয়েছে, তা উল্লেখ থাকবে। যাদের নামে ১০টির বেশি সিম রয়েছে, তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হবে—কোন ১০টি সিম সক্রিয় রাখা হবে। এ ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত নম্বর এবং যেসব সিম মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত, সেগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ এমদাদ উল বারী বলেন, মানুষের ভোগান্তি কমাতে সময় নিয়ে কাজটি করতে হবে। আগামী ১ আগস্ট থেকে গ্রাহকদের ৩ মাসের জন্য সময় দেওয়া হবে নিজ উদ্যোগে ১০টির বেশি সিম থাকলে তা বাতিল করার জন্য। এরপর বিটিআরসি বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাড়তি সিমগুলো বন্ধের উদ্যোগ নেবে।
এর আগে ২০১৭ সালে একজন গ্রাহকের জন্য সর্বোচ্চ ১৫টি সিম ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ২০২২ সালে সিম নিবন্ধন পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হলেও সিমের সংখ্যা সীমিত করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে জালিয়াতি, প্রতারণা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অতিরিক্ত সিম ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ায় নতুন করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা–বিষয়ক এক বৈঠকে দেখা গেছে, অতিরিক্ত সিম ব্যবহার করে কেউ কেউ চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইল ও নম্বর ক্লোনের মাধ্যমে প্রতারণা করছে। এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে মিথ্যা পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলছে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট সক্রিয় সিম রয়েছে ১৮ কোটি ৬২ লাখ। তবে প্রকৃত গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি ৭৫ লাখ। এদের মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি গ্রাহক ৫টির কম সিম ব্যবহার করেন। ৬ থেকে ১০টি সিম ব্যবহার করেন ১৬ শতাংশ, আর ১১টির বেশি সিম রয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ গ্রাহকের নামে।