এবার ওষুধে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫, ১২:৪৫ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

আগামী মাসের ১  তারিখ থেকে ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্ট করা ফার্মাসিউটিক্যাল ওষুধ আমদানির ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক কার্যকর করছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘোষণা দিয়েছেন।

আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যের ওপর অন্যতম নির্ভরশীল ভারতের ওষুধশিল্প এই সিদ্ধান্তের ফলে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

নিজ মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘২০২৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে আমরা যেকোনো ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্ট করা ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব। যদি কোনো কোম্পানি আমেরিকায় তাদের ফার্মাসিউটিক্যাল উৎপাদন প্ল্যান্ট তৈরি করে তাহলে হিসাব আলাদা। যদি নির্মাণকাজ শুরু হয়ে যায় তাহলে ওই ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যগুলোর ওপর কোনো শুল্ক আরোপিত হবে না।’

ট্রাম্পের সর্বশেষ শুল্কনীতি অনুযায়ী, রান্নাঘরের ক্যাবিনেট এবং বাথরুম ভ্যানিটি আমদানির ওপর ৫০ শতাংশ, সোফাসহ অন্যান্য আসবাবপত্রের ওপর ৩০ শতাংশ এবং ভারী ট্রাক আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এই শুল্ক আরোপের পেছনে কোনো আইনি ন্যায্যতা না দেখাতে পারলেও ট্রাম্পের দাবি, ‘জাতীয় নিরাপত্তা এবং অন্যান্য কারণে’ এই শুল্কারোপ প্রয়োজন ছিল।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের ট্রুথ পোস্ট থেকে এটা স্পষ্ট যে, কেবল বাণিজ্য কাঠামো এবং আমদানি করের কারণেই শুল্ক আরোপের প্রতি এত আগ্রহী নন ট্রাম্প। অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানোও এর পেছনে একটা বড় কারণ হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করেন তারা।

এদিকে ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছে ভারত। ভারত থেকে ওষুধের বৃহত্তম রপ্তানি বাজার হলো যুক্তরাষ্ট্র। ভারতের ফার্মাসিউটিক্যালস এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, বিগত অর্থবছরে ভারতের ২৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ফার্মাসিউটিক্যাল রপ্তানির মধ্যে ৩১ শতাংশই গেছে যুক্তরাষ্ট্র। অর্থের হিসেবে যা ৮ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার (৭৭ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা)। ২০২৫ সালের প্রথমার্ধেও ৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার (৩২ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা) মূল্যের ওষুধ রপ্তানি হয়েছে।

বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত ৪৫ শতাংশেরও বেশি জেনেরিক ওষুধ এবং ১৫ শতাংশ বায়োসিমিলার ওষুধ সরবরাহ করে ভারত। ড. রেড্ডি’স, অরবিন্দ ফার্মা, জাইডাস লাইফ সায়েন্সেস, সান ফার্মা এবং গ্ল্যান্ড ফার্মার মতো কোম্পানিগুলো আমেরিকান বাজার থেকে তাদের মোট আয়ের ৩০-৫০ শতাংশ উপার্জন করে।

যদিও আমেরিকার এই সর্বশেষ শুল্ক প্রধানত ব্র্যান্ডেড এবং পেটেন্ট করা ওষুধকে লক্ষ্য করছে। এ ধরনের ওষুধ মূলত বহুজাতিক সংস্থাগুলোর দখলে, তবুও ভারতের জটিল জেনেরিক এবং বিশেষায়িত ওষুধগুলোও এই নজরদারির আওতায় আসবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এই মুহূর্তে সান ফার্মা ছাড়া অন্য কোনো ভারতীয় কোম্পানির আমেরিকায় বিক্রির জন্য ব্র্যান্ডেড/পেটেন্ট করা পণ্য নেই। উপরন্তু, বড় কোম্পানিগুলোর ইতিমধ্যেই আমেরিকায় উৎপাদন সুবিধা রয়েছে।