বৃষ্টিতে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বর, যেভাবে সতর্ক হবেন

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৫, ০৯:২৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

বর্ষাকাল মানেই প্রকৃতির শীতল পরশ। তবে পাশাপাশি জলাবদ্ধতা, নোংরা পানি জমে থাকার কারণে বাড়ছে ভয়াবহ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। প্রতিবার বৃষ্টির মৌসুমেই বাংলাদেশসহ অনেক দেশে ডেঙ্গু রোগ বাড়তে দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে এডিস মশার বিস্তার ঘটে সবচেয়ে বেশি। তাই বর্ষাকালে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা এবং সতর্কতা জরুরি।

ডেঙ্গু কেন বাড়ে বর্ষায়

ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত রোগ, যা এডিস ইজিপ্টি নামক মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই মশা সাধারণত ভোর ও সন্ধ্যার সময় কামড়ায়। বৃষ্টির সময় বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে থাকে প্লাস্টিকের বোতল, টায়ার, টব, ফুলদানি, কনস্ট্রাকশনের খোলা জায়গা, ছাদের পানি এসব জায়গা এডিস মশার প্রজননের আদর্শ স্থান। মাত্র ৫-৭ দিনে এসব জমে থাকা পানিতে মশার ডিম ফুটে যায় এবং প্রাপ্তবয়স্ক মশা তৈরি হয়।

ডেঙ্গুর সাধারণ লক্ষণ

হঠাৎ করে জ্বর (১০২–১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট), চোখের পেছনে ব্যথা, মাথাব্যথা, পেশি ও গাঁটে ব্যথা, শরীরে লালচে দাগ, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, দুর্বলতা ডেঙ্গুর অন্যতম লক্ষ্মণ।

ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রূপ নিলে রক্তক্ষরণ, প্রেসার কমে যাওয়া, অর্গান ফেইলিউরের মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই শুরুতেই সতর্ক হওয়া জরুরি।বৃষ্টির দিনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে যেভাবে সতর্ক হবেন চলুন জেনে নেই।

জমে থাকা পানি অপসারণ করুন

ডেঙ্গু প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো এডিস মশার বংশবিস্তার বন্ধ করা। প্রতিদিন বাড়ির আশপাশে কোথাও পানি জমে আছে কি না তা দেখুন। ফুলদানি, টব, ফ্রিজের নিচের ট্রে, এসির পানি নিষ্কাশনের জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার করুন। 
ছাদ বা বারান্দায় পড়ে থাকা টব, কৌটা, টায়ার, বোতলে যেন পানি না জমে থাকে।

মশারি ও মশারোধী ক্রিম ব্যবহার করুন

দিনে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করুন, কারণ এডিস মশা দিনের বেলায় বেশি সক্রিয়। বাইরে গেলে মশারোধী ক্রিম বা লোশন (যেমন DEET-যুক্ত প্রোডাক্ট) ব্যবহার করুন। শিশুদের জন্য উপযুক্ত রিপেলেন্ট ব্যবহার করা উচিত।

ঘরের ভিতরে মশা ঢুকতে দেবেন না
দরজা-জানালায় মশানিরোধী নেট লাগান। সন্ধ্যার আগে জানালা-দরজা বন্ধ রাখুন। অ্যারোসল স্প্রে বা ধূপ ব্যবহার করে ঘরের মশা দূর করুন।

গাছপালা ও বাগান যত্নে রাখুন
টবের নিচে বা পাতার মাঝে পানি জমে থাকা এডিস মশার প্রজনন কেন্দ্র হতে পারে। গাছের চারপাশ নিয়মিত পরিষ্কার করুন।

স্থানীয় উদ্যোগে অংশ নিন
প্রতিবেশী বা কমিউনিটি মিলে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালান। স্কুল, অফিস, মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টারে সপ্তাহে একদিন ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা দিবস’ পালন করুন।

জ্বর হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

ডেঙ্গু জ্বর সন্দেহ হলে কোনোভাবেই নিজে ওষুধ খাওয়া যাবে না, বিশেষ করে ব্যথানাশক (যেমন অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন) খাওয়া বিপজ্জনক। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল গ্রহণ করা যায় এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি।