জরায়ু ভালো রাখতে যেসব খাবার খাবেন

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৫, ০৮:৩২ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

নারী স্বাস্থ্য রক্ষায় জরায়ুর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। জরায়ুর সুস্থতার ওপর সন্তান ধারণ, হরমোন নিয়ন্ত্রণ, মাসিক চক্রের স্বাভাবিকতা এবং সার্বিক প্রজনন স্বাস্থ্য অনেকাংশেই নির্ভর করে। কিন্তু ব্যস্ত জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাবার, স্ট্রেস ও হরমোনের অসামঞ্জস্যতা অনেক নারীর জরায়ুর সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

সুস্থ জীবনযাপন ও সুষম খাবার গ্রহণের মাধ্যমে জরায়ুকে দীর্ঘ সময় ভালো রাখা সম্ভব। এমন কিছু খাবারের তালিকা করুন, যা জরায়ুর স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।

নিয়মিত ফলমূল খান
ফলমূলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান জরায়ুর কোষকে সুরক্ষা দেয় এবং হরমোন ভারসাম্য রক্ষা করে। বিশেষত যেসব ফল জরায়ুর জন্য ভালো। যেমন_ ডালিমে আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এই ফল জরায়ুর রক্তসঞ্চালন বাড়ায় এবং কোষের সুস্থতা বজায় রাখে। বেরিতে (স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি) রয়েছে ফ্ল্যাভনয়েডস ও ভিটামিন সি, যা জরায়ুর প্রদাহ কমায়। কমলা/লেবু জাতীয় ফলে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলগুলো জরায়ুর সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পেঁপে খেলে  হজম শক্তি বাড়ায়, হরমোন ভারসাম্য বজায় রাখে। তবে গর্ভাবস্থায় তা না খাওয়াই ভালো।

শাকসবজি
বিশেষ করে সবুজ পাতাযুক্ত সবজিতে থাকে ফলেট, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে, যা জরায়ুর কোষ গঠনে সাহায্য করে। পালং শাক, কলমি শাক, লাল শাক জরায়ুর টিস্যু গঠন ও রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়ক। ব্রোকলি ও বাঁধাকপিতে রয়েছে সালফার যৌগ, যা টক্সিন বের করে দেয় ও জরায়ুর ডিটক্সে সহায়তা করে। গাজরে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ গাজর জরায়ুর কোষ পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখে।


ফলিক অ্যাসিড ও আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

জরায়ুতে সুস্থ রক্তপ্রবাহ বজায় রাখতে আয়রন ও ফলেট গুরুত্বপূর্ণ। কলা, ডাল, বাদাম, কুমড়োর বীজ ফলেট ও আয়রনে সমৃদ্ধ, যা জরায়ুর কোষ সুস্থ রাখে। লাল মাংস (পরিমিত পরিমাণে) আয়রনের ভালো উৎস। যা রক্তশূন্যতা রোধ করে। কলিজায়  উচ্চমাত্রায় আয়রন ও ভিটামিন বি-১২ থাকায় জরায়ুর পুষ্টিতে সাহায্য করে।

স্বাস্থ্যকর চর্বি ও ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড জরায়ুর প্রদাহ কমায়, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) ও এন্ডোমেট্রিওসিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আলমন্ড, ওয়ালনাট, তিলবীজ জরায়ুর হরমোন ভারসাম্য রক্ষা করে। চিয়া বীজ, ফ্ল্যাক্স সিডে ফাইবার ও ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ। মাছ বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যামন, ম্যাকেরেল জরায়ুর কোষে প্রদাহ কমায় ও হরমোন ভারসাম্য রক্ষা করে।

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
দুগ্ধজাত খাবারে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি থাকে, যা জরায়ুর পেশি ও হাড় শক্ত রাখে। তবে ফ্যাটযুক্ত না হয়ে লো-ফ্যাট খাবার নির্বাচন করা উত্তম। দই হজমে সহায়ক এবং জরায়ুতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে। পনির হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তবে পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।

পর্যাপ্ত পানি
জরায়ুর স্বাস্থ্য রক্ষায় পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পানি খেলে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আবরণ পরিষ্কার থাকে এবং হরমোন নিঃসরণ সঠিকভাবে কাজ করে। দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি খাওয়ার চেষ্টা করুন। ডাবের পানি বা লেবু পানি শরীরকে আর্দ্র রাখে এবং টক্সিন বের করে দেয়।