বাজারে পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে ১৫-২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি পেঁয়াজ। বৈরী আবহাওয়া, আমদানি বন্ধ আর সরবরাহ কম—এই তিন কারণে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা বা ২৪ শতাংশ পর্যন্ত। চড়া দামে ভোগান্তিতে পড়ছেন ক্রেতারা। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর তদারকির দাবি ভোক্তাদের।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বেশির ভাগ বাজারে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। কিন্তু কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে। খুচরা বাজারে তা ৮০ টাকা।
খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, পাবনা-ফরিদপুরসহ অন্যান্য উৎপাদন এলাকা থেকেই বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। তাই কমে বিক্রি সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়েই প্রয়োজনের চেয়ে কম কিনছেন ক্রেতারা।
দেশের পেঁয়াজের বেশি আবাদ হয় পাবনা অঞ্চলে। সেখানকার আড়তদাররা বলছেন, ভারত থেকে আমদানি বন্ধ অনেকদিন। বাজারে এখন যেসব পেঁয়াজ বেচাকেনা হয়, তার সবই দেশি। গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবার বেশি লাভের আশায় কৃষক সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন।
পেঁয়াজের বাড়তি দামের কারণ অনুসন্ধানে বাজার তদারকিতে নেমেছে ভোক্তা অধিদপ্তর। কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিকভাবে কারসাজির প্রমাণ না মিললেও অভিযান চলমান থাকবে।
গত দুই-তিন সপ্তাহে মৌসুমি বৃষ্টির কারণে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। যেমন গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাসখানেক আগে মরিচের দাম ছিল ৮০ থেকে ১২০ টাকা। এ ছাড়া করলা, কাঁকরোল, বরবটিসহ বেশির ভাগ সবজির কেজি এখন ৮০ টাকার আশপাশে। আমদানি করা টমেটোর কেজি ১৪০-১৫০ টাকা। অন্যদিকে বেগুনের দাম ২০-৩০ টাকা বেড়ে ১০০-১২০ টাকা হয়েছে।
সপ্তাহখানেকের মধ্যে দাম বেড়েছে মুরগির ডিমের। রাজধানীর খুচরা বাজারে গতকাল ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। পাড়ামহল্লায় এ দাম আরও কিছুটা বেশি। গত সপ্তাহে ডিমের ডজন ছিল ১২০–১২৫ টাকা। এদিকে তিন সপ্তাহ ধরেই বাজারে আগের চেয়ে বাড়তি দামে মুরগি বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় ও সোনালি মুরগি ৩০০ থকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আগে এ দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা কম ছিল।
ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। পাড়ামহল্লায় এ দাম আরও কিছুটা বেশি। গত সপ্তাহে ডিমের ডজন ছিল ১২০-১২৫ টাকা।
ভোক্তা অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস বলেন, ‘এখানে আমরা তাদের বলেছি যে আপনারা ক্যাশমেমো রাখবেন। ক্রয়-বিক্রয়ের যে ট্রান্সপারেন্সি, সেই ডকুমেন্টগুলো যেন থাকে। অন্য যে সব নিয়মকানুন আছে, যেমন মূল্যতালিকা যেন থাকে। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে আমরা যেটা বুঝতে পারছি, হাটে কৃষকরাই এ দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। আরও বেশি দাম পাওয়ার আশায় কৃষক হয়তো সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন।’
বাজার নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজ আমদানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হবে বলেও জানায় ভোক্তা অধিদপ্তর।