আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের অর্থনীতি ও ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির অগ্রগতি একযোগে পর্যালোচনা শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থার বার্ষিক মূল্যায়ন (আর্টিকেল আই ভি রিভিউ) এবং ঋণ কর্মসূচির পঞ্চম দফা পর্যালোচনা একসঙ্গে করছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) অর্থ সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদারের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে এ পর্যালোচনা কার্যক্রম শুরু হয়। আইএমএফ মিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংস্থাটির ডেপুটি ইউনিট চিফ ক্রিস পাপাগিওরগিও।
প্রাথমিক বৈঠকে আইএমএফ প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অবস্থা, রাজস্ব আহরণ, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন এবং বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তারা জুন পর্যন্ত কর্মসূচির শর্ত পূরণের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন এবং চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে রাজস্ব আহরণ ও ব্যয় বাস্তবায়নের পূর্বাভাস জানতে চান।
সূত্র মতে, রাজস্ব সংগ্রহ ও এডিপি বাস্তবায়নে লক্ষ্যপূরণ না হওয়ার কারণ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আংশিকভাবে দায়ী বলে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার ভাষ্যমতে, বুধবারের আলোচনায় সরকারি কর্মচারীদের জন্য গঠিত বেতন কমিশন (পে কমিশন) নিয়ে আইএমএফ কোনও প্রশ্ন তোলেনি। কমিশনের প্রতিবেদন ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা এবং এর আংশিক বাস্তবায়নের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে। তবে এটি বাস্তবায়িত হলে বাজেটে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এছাড়া ব্যাংক খাত সংস্কারও আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিল। আইএমএফ পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চায়। অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, উপদেষ্টা পরিষদ প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দিয়েছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আনুষ্ঠানিক লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
জানা গেছে, আইএমএফের সঙ্গে জন্য ষষ্ঠ কিস্তি ছাড় সংক্রান্ত আলোচনা চলবে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
আইএমএফের সনদ অনুযায়ী, সদস্য দেশগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থা প্রতি বছর একটি বিস্তারিত মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে যায়, যা “আর্টিকেল আই ভি রিভিউ” নামে পরিচিত। এই প্রতিবেদন পরবর্তী সময়ে সংস্থার নির্বাহী বোর্ডে উপস্থাপন করা হয় এবং প্রকাশ করা হয় আইএমএফের ওয়েবসাইটে।