ভোরে ঘুম থেকে ওঠা ভালো অভ্যাস।। কারণ এটি শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমাদের শরীর ও মন প্রকৃতির ছন্দ অনুসরণ করে কাজ করে, যাকে বলে সার্কাডিয়ান রিদম। ভোরে ঘুম থেকে ওঠা এই প্রাকৃতিক ছন্দের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যা শরীর ও মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
মানসিক প্রশান্তি ও ইতিবাচকতা বৃদ্ধি পায়
ভোরে পরিবেশ শান্ত, নির্মল ও দূষণমুক্ত থাকে। সূর্যোদয়ের আগে বা ঠিক পরেই ঘুম থেকে উঠলে মন প্রফুল্ল থাকে এবং দিনটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে শুরু হয়। ভোরের আলো মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামক হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করে, যা আমাদের আনন্দ ও আত্মতুষ্টির অনুভূতি দেয়।
শরীরের বিপাকক্রিয়া উন্নত হয়
ভোরে ঘুম থেকে উঠলে বিপাকক্রিয়া সক্রিয় হয়। যা সারাদিন শক্তি জোগায়। সকালের নাশতা শরীরে বিপাকক্রিয়াকে সক্রিয় করে। এতে শরীর ক্লান্ত।হয় না। মনোযোগও ঠিক থাকে।
শরীরচর্চায় উপকার পাওয়া যায়
ভোরে ব্যায়াম করলে অক্সিজেন গ্রহণ, রক্ত সঞ্চালন ও পেশির কার্যকারিতা বেড়ে যায়। নিয়মিত সকালের হাঁটা, যোগ ব্যায়াম বা দৌড় শরীরকে ফিট রাখে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
ঘুমের গুণগত মান উন্নত হয়
যারা প্রতিদিন ভোরে ওঠেন, তাদের শরীরের ঘুমচক্র একটি নির্দিষ্ট রুটিনে চলে আসে। এতে গভীর ও নিরবিচারে ঘুম হয়, যা শরীরের কোষ মেরামত, স্মৃতিশক্তি এবং মানসিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
উৎপাদনশীলতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি পায়
ভোরে মন অনেকটা সতেজ ও প্রফুল্ল থাকে। এই সময়ে পড়াশোনা বা কোনো সৃজনশীল কাজ করলে তা বেশি কার্যকর হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, সকালের মানুষদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
ভোরে ওঠা মানে সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসা। যা আমাদের শরীরে ভিটামিন-ডি তৈরিতে সাহায্য করে। ভিটামিন-ডি হাড় মজবুত করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মেজাজ উন্নত করে। এছাড়াও, নিয়মিত রুটিন মানলে শরীরের অন্যান্য হরমোনও সঠিকভাবে কাজ করে, যেমন কর্টিসল ও মেলাটোনিন।
চিন্তা ও উদ্বেগ কমে যায়
ভোরে ঘুম থেকে উঠলে কাজের চাপ ও দুশ্চিন্তা কমে যায়। আপনি ধীরে সুস্থে দিন পরিকল্পনা করতে পারেন, যা মানসিক চাপ কমায়।
প্রাকৃতিক পরিবেশের উপকারিতা
ভোরের নির্মল বাতাসে ক্ষতিকর ধূলিকণা ও দূষণ অনেক কম থাকে। সেই সাথে পাখির ডাক, সবুজ গাছের পাতায় শিশির – এসব উপাদান মনের প্রশান্তি আনে এবং মানসিক চাপ কমায়।