ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চারটি শর্ত দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শর্তগুলো হলো ইউক্রেনকে পুরো পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চল ছাড়তে হবে, ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে হবে, নিরপেক্ষ থাকতে হবে এবং পশ্চিমা সেনাদের দূরে রাখতে হবে। ক্রেমলিনের শীর্ষ পর্যায়ের তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, গত শুক্রবার আলাস্কায় মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পুতিন। চার বছরেরও বেশি সময় পর এটি ছিল প্রথম রাশিয়া-মার্কিন শীর্ষ সম্মেলন।
সূত্র জানায়, প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠকের পুরোটা সময় ট্রাম্প-পুতিন ইউক্রেনকে ঘিরে সম্ভাব্য সমঝোতা কেমন হতে পারে তা নিয়েই আলোচনা করেছেন।
ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে বৈঠকের পর পুতিন বলেন, এ বৈঠক ইউক্রেনে শান্তির পথে এগোবার দরজা খুলে দিতে পারে। তবে কোনো পক্ষই বিস্তারিত জানায়নি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শীর্ষ বৈঠকের পর পুতিনের প্রস্তাবের কিছু চিত্র উঠে এসেছে। সেখান থেকে বোঝা যাচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধ সমাপ্তির জন্য সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি নিয়ে ক্রেমলিন কী ধরনের শর্ত দিতে চাইছে।
সূত্রগুলো জানায়, পুতিন তার আগের শর্ত থেকে কিছুটা ছাড় দিয়েছেন। গত বছর জুনে দেওয়া শর্তে তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেনকে চারটি প্রদেশ (দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া) ছেড়ে দিতে হবে, যা রাশিয়া নিজের অংশ হিসেবে দাবি করে। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে তিনি কেবল দনবাস অঞ্চল পুরোপুরি ছাড়ার শর্ত দিয়েছেন। এর বিনিময়ে খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়ায় যুদ্ধ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আমেরিকার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে রাশিয়া দনবাসের প্রায় ৮৮ শতাংশ এবং খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়ার প্রায় ৭৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, রাশিয়া ইউক্রেনের খারকিভ, সুমি ও দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের ছোট ছোট দখলকৃত অংশ ছেড়ে দিতে রাজি।
তবে পুতিন ইউক্রেনের ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তি ইস্যুতে তাঁর আগের অবস্থানেই অনড় রয়েছেন। তিনি চান ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা বাতিল করুক এবং ন্যাটোর পক্ষ থেকে আইনগতভাবে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হোক যে, এই জোট আর পূর্বদিকে সম্প্রসারিত হবে না। পাশাপাশি ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে হবে এবং কোনো পশ্চিমা সেনা যেন ইউক্রেনের মাটিতে শান্তিরক্ষী বাহিনী হিসেবেও মোতায়েন না হয়।
রাশিয়ার প্রস্তাব নিয়ে হোয়াইট হাউস ও ন্যাটো তৎক্ষণাৎ কোনো মন্তব্য করেনি।