প্রতি রাতে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হতো ৩০-৪০টি ঘোড়ার মাংস

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ০২:২৩ পিএম

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হায়দারাবাদ (রথখোলা) এলাকায় অবৈধভাবে ঘোড়া জবাইয়ের একটি কারখানায় অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। এ সময় জবাইয়ের জন্য প্রস্তুত রাখা ৩৭টি রোগাক্রান্ত ঘোড়া এবং প্রায় পাঁচ মণ ঘোড়ার মাংস জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, র‌্যাব-১, পুলিশ ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের যৌথ অভিযানে এই উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে কারখানার মালিক শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শফিকুল ও তার বাবা জয়নাল আবেদিন গত এক বছর ধরে ওই এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে নিয়মিতভাবে ঘোড়া কিনে জবাই করতেন। পরে নিষিদ্ধ এই ঘোড়ার মাংস রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হতো। প্রতিরাতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি ঘোড়া জবাই করা হতো বলে জানায় স্থানীয়রা।

অবৈধভাবে জবাইয়ের শব্দ, দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকাবাসী বহুবার প্রতিবাদ জানালেও তাতে কোনো ফল হয়নি। স্থানীয়রা বলছেন, এ ধরনের নোংরা ও নিষিদ্ধ কর্মকাণ্ড বন্ধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, “ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ। এর আগেও শফিকুলকে তিনবার জরিমানা করা হয়েছিল, কিন্তু সে থামেনি। এবার বড় পরিসরে অভিযান চালানো হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

তিনি আরও জানান, উদ্ধার করা জীবিত ঘোড়াগুলোর অধিকাংশই রোগাক্রান্ত ও মানবদেহের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। উদ্ধার হওয়া ঘোড়া ও মাংস বুধবার সকালে গাজীপুর প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

র‌্যাব-১-এর পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় গোপনে ঘোড়া জবাইয়ের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। ঘটনাস্থল থেকে ঘোড়ার মাংস সংরক্ষণের নানা প্রমাণ ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।”

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুতে একই এলাকায় ঘোড়ার মাংস বিক্রি বন্ধে জেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি আবারও গোপনে শুরু হয় এই অবৈধ কার্যক্রম, যা শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের নজরে আসে।