ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার এক গ্রামে তিন দিন ধরে সংঘর্ষ চলছে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চলা এ সংঘর্ষে বুধবার নিয়াজুল হোসেন (৪৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছে ১০ জন।
জানা যায়, তৃতীয় দিনের মতো বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার নাটাই ইউনিয়নের চান্দের বাড়ি ও ছলিমের বাড়ির গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে কিছু বাড়িঘর ভাঙচুরও করা হয়। নিহত মিয়াজুল চান্দের গোষ্ঠীর তোতা মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার রাতে ছলিমের বাড়ির শহিদ মিয়ার ছেলে কয়েকজনকে নিয়ে চান্দের বাড়িতে বসে মাদক সেবন করছিল। এ সময় চান্দের বাড়ির লোকজন তাতে বাধা দিলে এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সোমবার রাতেই দুই গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা হয়।
বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকালে চান্দের বাড়ি ও ছলিম বাড়ির লোকজন দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আবারও সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের ১০-১২টি বাড়িতে ভাঙচুর চালায় দাঙ্গাবাজরা। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন।
এরই জের ধরে বুধবার বিকেলে ফের সংঘর্ষ জড়ায় দুই গোষ্ঠীর লোকজন। এ সময় টেঁটা, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া চলে। সংঘর্ষ চলাকালে ১০-১২টি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এতে পুরো গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষটি গ্রামের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে টেটার আঘাতে চান্দের গোষ্ঠীর নিয়াজুল হোসেন গুরুতর আহত হন। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎস মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাই মাসুদ রানা বলেন, ‘আমার ভাইকে টেটা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিনের গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের জের ধরে এই সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’