• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নতুন রূপে সাজবে পর্যটনকেন্দ্র আলুটিলা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২১, ০২:৩১ পিএম
নতুন রূপে সাজবে পর্যটনকেন্দ্র আলুটিলা

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকেই খাগড়াছড়ি ভ্রমণ করেন। খাগড়াছড়ির অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র আলুটিলা। এই পর্যটনকেন্দ্রে আকর্ষণীয় অনেক স্থান রয়েছে। কিন্তু এসব স্থান অযত্নে, অবহেলায় পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে জনপ্রিয় এই পর্যটনকেন্দ্রটি নতুন রূপে সাজানো হবে। আলুটিলাকে পর্যটনবান্ধব করে তুলতে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

খাগড়াছড়ি শহর থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে পর্যটনকেন্দ্র আলুটিলা অবস্থিত। এটি উন্নয়নে পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা বাস্তবায়নের পর আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আলুটিলায় ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে ভিউ পয়েন্ট কুঞ্জছায়া এবং প্রবেশমুখেই স্বর্ণ তোরণ। কুঞ্জছায়া থেকে পাখির চোখে দেখা মেলে নয়নাভিরাম খাগড়াছড়ি শহর ও দূরের পর্বত শ্রেণি। যেখানে বৃষ্টির সময় মেঘ এসে ছুঁয়ে যায় পর্যটকদের। সেখানে নির্মাণ হচ্ছে ঝুলন্ত ব্রিজ, নন্দনকানন পার্ক, এমপি থিয়েটার ও খুমপুই রেস্টহাউস।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, আলুটিলা উন্নয়নে মাস্টারপ্ল্যান গ্রহণ করা হয়েছে। কয়েক কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কাজও এগিয়ে যাচ্ছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, “এখানে প্রায় ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। পাহাড়ের স্থাপত্যশৈলী সঙ্গে সংগতি রেখেই দৃষ্টিনন্দন তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া আলুটিলার দুটি পাহাড়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ঝুলন্ত ব্রিজ। পর্যটকরা আলুটিলা গুহা দেখে বের হয়েই ঝুলন্ত ব্রিজের মাধ্যমে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যেতে পারবে। পাহাড়গুলোতেও পর্যটনবান্ধব স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।”

“পাহাড়ে স্থাপনার মধ্যে রয়েছে ল্যান্ডস্কেল গার্ডেনিং। যেখানে বসে পর্যটকরা পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। এ ছাড়া নির্মাণ হবে ভিউ পয়েন্ট বা ছবি কর্নার। পাহাড়ের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে নির্মাণ করা হচ্ছে এএমপি থিয়েটার। দর্শক গ্যালিরিতে বসে ৫০০ পর্যটক একসঙ্গে পাহাড়ের সংস্কৃতি বিষয়ে পরিচিত হতে পারবে।”

আলুটিলা পাহাড়ে রাতযাপন করতে পর্যটকদের জন্য় খুমপুই রেস্টহাউসও নির্মাণ করা হচ্ছে। এর ব্যয় ধরা হচ্ছে প্রায় দুই কোটির বেশি টাকা। চার তলাবিশিষ্ট হবে এই রেস্টহাউসটি। পর্যটকদের জন্য় সব ধরনের সুবিধা থাকবে এই রেস্টহাউসে।

১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়িকে জেলা ঘোষণা করা হয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খাগড়াছড়ির পর্যটনকেন্দ্রগুলোর দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের ওপর দেওয়া হয়। এর মধ্যে রহস্যময় আলুটিলার প্রাকৃতিক গুহা বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক কোকোনাথ ত্রিপুরা ও চন্দ্রকিরণ ত্রিপুরা বলেন, “আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রকে ঘিরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনেক স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে। বর্তমানে পর্যটকদের আগমনও বেড়েছে। সরকারি ছুটির দিনগুলোতে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার পর্যটক আলুটিলায় বেড়াতে আসেন।”

আলুটিলায় যেভাবে যাবেন

খাগড়াছড়ি শহর থেকে চাঁন্দের গাড়ি অথবা লোকাল বাসে চড়ে আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রে যেতে হবে। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করেও যেতে পারবেন। তাই আপনি সাজেক ভ্রমণের প্ল্যান করলে আলুটিলা গুহায় অল্প সময়েই নিউজিল্যান্ড পাড়াটাও ঘুরে আসতে পারেন। এ ছাড়া হাজাছড়া ঝর্ণাও দেখে নিতে পারেন।

যেখানে খেতে পারেন

খাগড়াছড়ি শহরের কাছেই পানখাই পাড়ায় ঐতিহ্যবাহী সিস্টেম রেস্তোরাঁর অবস্থান। এখানে খাগড়াছড়ির ঐতিহ্যবাহী খাবার খেতে পারবেন। যোগাযোগ : ০৩৭১-৬২৬৩৪, ০১৫৫৬৭৭৩৪৯৩, ০১৭৩২৯০৬৩২২।

যেখানে থাকবেন

খাগড়াছড়িতে পর্যটন মোটেলসহ বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে। পর্যটন মোটেল শহরে ঢুকতেই চেঙ্গী নদী পার হলেই পড়বে। মোটেলের সব কক্ষই দুই বিছানার। ভাড়া পড়বে এসি ২১০০ টাকা এবং নন এসি ১৩০০ টাকা। এসি স্যুইট রুম ৩,১০০ টাকা। মোটেলের অভ্যন্তরে মাটিতে বাংলাদেশের মানচিত্র বানানো আছে।

পুরো খাগড়াছড়ি জেলায় বৈদ্যুতিক গোলযোগ হয়। এতে ভোল্টেজ ওঠানামা করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসি রুমগুলো নন-এসি হিসেবে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। যোগাযোগ করা যাবে ০৩৭১-৬২০৮৪৮৫।

হোটেল ইকো ছড়ি ইন- খাগড়াপুর ক্যান্টনমেন্টের পাশে পাহাড়ি পরিবেশে অবস্থিত। এটি রিসোর্ট টাইপ হোটেল। আগ থেকেই বুকিং দিতে হবে। হোটেলের খেতে চাইলেও আগেই অর্ডার করে রাখতে হবে। হোটেল বুকিং করার জন্য় যোগাযোগ করতে পারেন ০৩৭১-৬২৬২৫, ৩৭৪৩২২৫ নম্বরে।

Link copied!