ঐতিহাসিক স্থানগুলোর জন্য় বিখ্যাত ভারত। এখানে ধর্মীয়স্থানগুলোর রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন তাত্পর্য। বৈচিত্রময় এসব স্থানগুলো ভারতকে আরও বিখ্যাত করে তুলেছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার উঠে এসেছে বিশেষ এক মন্দিরের কথা। যা ভারতের উত্তরাখণ্ডে অবস্থিত।
ভারতের উত্তরাখণ্ডে চামোলি জেলায় অবস্থিত বিশেষ এই মন্দিরটির নাম বংশী নারায়ণ। এই মন্দিরের বিশেষত্ব হলো এর দরজা বছরে একবারই খোলা হয়। বাকি দিনগুলোতে বন্ধ থাকে। সেই দিনটি হলো রাখি পূর্ণিমার দিন। রাখীর বিশেষ অনুষ্ঠান উপলক্ষে মন্দিরটি খোলা হয়। আর ওই দিনই সেখানে ভিড় করেন স্থানীয়রা।
বংশী নারায়ণ মন্দিরটি সমৃদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২ হাজার ফুটেরও বেশি উচ্চতায় অবস্থিত। কথিত আছে, যখনই রাখীর দিন আসে, তখনই মন্দিরের আশেপাশের জায়গাগুলোকে পরিস্কার করা হয়। ভক্তরা যেন ভারতের প্রাচীন মন্দিরটি দর্শনে আসতে পারেন সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ভারতেরগণমাধ্যমে জানানো হয়, রাখী বন্ধনের দিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে খুলে যায় মন্দিরটির দরজা। আর সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী ৩৬৪ দিনের জন্য মন্দিরটি বন্ধ হয়ে যায়। মন্দিরের দরজা খুলতেই সূর্যদোয়ের সময়ই স্থানীয় নারীরা অধিষ্ঠিত বিগ্রহকে রাখী বাঁধতে ভিড় করেন। এরপরই শুরু হয় পূজা অর্চনা।
হিন্দুদের বিশ্বাস অনুযায়ী, সুপ্রাচীন এই মন্দিরটি ষষ্ঠ শতাব্দীতে নির্মিত হয়। অনেকের বিশ্বাস, নারদমুনি এই মন্দিরে ৩৬৪ দিন বিষ্ণুর পুজো করতেন। এই একটি দিন বাকি রেখে যান। যাতে ভক্তরা এখানে পুজার্চনা করতে পারেন।
সেই বিশ্বাস অনুযায়ী, স্থানীয়রা শ্রাবণ পূর্ণিমায় নারায়ণের পুজো করেন। আর রাখীবন্ধনের দিন নারায়ণের জন্য গ্রামের প্রতিটি বাড়ি থেকে মাখন নৈবেদ্য হিসেবে দেওয়া হয়।
উরগাম উপত্যকায় অবস্থিত এই মন্দির দেখতে ভিড় করেন পর্যটকরাও। অনেক পর্যটক ট্রেকিং করে সেখানে যান। উরগাম উপত্যকায় এর অবস্থান বলে একে বুগয়ালও বলা হয়।
মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় ১০ ফুটের মতো। থাকে। এর ভেতরে শ্রীকৃষ্ণ ও কল্যানকর শিবের মূর্তি রয়েছে। এর পুরোহিতরা হলেন রাজপুর। যারা প্রতি বছর রাখীর দিনে বিশেষ পুজো করেন এই মন্দিরে। এই মন্দিরের কাছে একটি ভাল্লকের গুহা রয়েছে। সেখানেই ভক্তরা নৈবেদ্য দেন।
আপনার মতামত লিখুন :