দীর্ঘ ২০ বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদেরকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেঞ্চুরিয়নে সেদিন দলীয় পারফর্মেন্সে ৩৮ রানের ব্যবধানে জয় পেয়েছিল টাইগাররা। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম ইকবালদের সামনে সুযোগ ছিল সিরিজ নিশ্চিত করার। কিন্তু বাংলাদেশের টপ অর্ডারের ব্যাটারদের ব্যর্থতায় দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৭ উইকেটের ব্যবধানে হেরে গেল আফিফ-মিরাজরা।
রোববার (২০ মার্চ) জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান করেছিল তামিম বাহিনী। বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ১৯৫ রানের লক্ষ্য ৩৭.২ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়েই টপকে গেলো প্রোটিয়ারা। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা ফেরালো স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকদের বোলিংয়ের রেষানলে পড়েন বাংলাদেশের টপ অর্ডারের ব্যাটাররা। কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিডি, ওয়েইন পার্নেলদের আগুন ঝরা বোলিংয়ে মাত্র ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল টাইগাররা। এরপর সেখান থেকে দলের হাল ধরেন আফিফ-মাহমুদউল্লাহ জুটি। তারা দুজনে মিলে করেন ৬০ রানের জুটি। কিন্তু রিয়াদ ২৫ রান করে শামসির বলে বিদায় নিলে একশ রানের আগেই থামে এই জুটি।
ছন্দ হারানো বাংলাদেশ দল সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায় আফিফ-মিরাজের ব্যাটে। আফিফের অর্ধশতিক হাঁকানো ১০৭ বলে ৭২ রানের ইনিংসের সঙ্গে মিরাজ করেন ৪৯ বলে ৩৮ রান। তার পরেও বাকিদের ব্যর্থতার দিনে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে রাবাদা একাই তুলে নেন ৫টি উইকেট। এছাড়া এনগিদি, পারনেল, শামসি ও ভ্যানডার ডুসেন নেন ১টি করে উইকেট।
বাংলাদেশের দেয়া ১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেই আগ্রাসী ব্যাটিং বেছে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার জানেমান মালান ও কুইন্টন ডি কক। এই দুই ব্যাটার বাংলাদেশি বোলারদের তুলোধুনো করে রানের ফোয়ারা ছড়িয়ে যান। টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাট করে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৮তম হাফ সেঞ্চুরি। অন্যদিকে দেখেশুনে ব্যাট করছিলেন মালান। এরপর মিরাজের ঘুর্ণিতে ৪০ বলে ২৬ রান করা মালান বিদায় নিলে ভাঙ্গে তাদের ৮৬ রানের জুটি।
মিরাজের দেখাদেখি দায়িত্ব তুলে নিলেন সাকিব আল হাসানও। ১৬তম ওভারে সাকিবের দ্বিতীয় বলে ডিপ মিডউইকেটে আফিফ হোসেনের দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হন ডি কক। বিধ্বংসী হয়ে ওঠা এই ব্যাটার ৪১ বলে ৬২ রান করেন। প্রোটিয়া এই উদ্বোধনী ব্যাটার ৯টি বাউন্ডারি এবং ২টি ছক্কায় সাজান তার ইনিংস।
এরপর অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার সঙ্গে কাইল ভেরানে বড় জুটি গড়ে বাংলাদেশকে নিরাশ করতে থাকেন। শেষদিকে আফিফের বলে বাভুমা (৩৭) ফিরে গেলেও ভ্যানডার ডুসেনকে সঙ্গে নিয়ে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন ভেরানে। এই ব্যাটার ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যদিকে ডুসেন অপরাজিত ছিলেন ৮ রানে।
বাংলাদেশের পক্ষে বোলিংয়ে সাকিব, মিরাজ ও আফিফ একটি করে উইকেট পান। ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন ৫ উইকেট নেয়া দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাদা।
সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচে আগামী ২৩ মার্চ সেঞ্চুরিয়নের সুপার স্পোর্টস পার্কে মুখোমুখি হবে দুদল।