পাকিস্তানের মাটিতে একের পর এক নাটক যেন চলছেই। দীর্ঘ ২৪ বছর পর দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসে অস্ট্রেলিয়া প্রথম দুই টেস্টে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ড্র নিয়েই সন্তষ্ট থাকতে হয়েছিল। অবশেষে পাকিস্তান সফরে জয়ের দেখা পেলো প্যাট কামিন্সের দল। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে স্বাগতিকদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে ১১৫ রানের জয়ে সিরিজও নিজেদের করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
সবশেষ ১৯৯৮ সালে পাকিস্তান সফরে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজেও ১-০ ব্যবধানে জিতেছিল তারা। তবে সেবার জিতেছিল প্রথম ম্যাচ। এবার তারা জিতলো সিরিজের শেষ ম্যাচটি। লাহোর টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ২২৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছিল সফরকারীরা। ফলে শেষ ইনিংসে পাকিস্তানের জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ১১৭ ওভারে ৩৫১ রান। তবে শুরুতে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করলেও ৯২.১ ওভারে ২৩৬ রানে অলআউট হয়ে যায় বাবর আজমের দল।
চতুর্থ দিনে অবিছিন্ন জুটিতে ৭৩ রান যোগ করেছিলেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার ইমাম উল হক ও আব্দুল্লাহ শফিক। কিন্তু পঞ্চম দিনে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের তোপে পাকিস্তান নিজেদের দাঁড় করাতে পারেনি। দিনের চতুর্থ ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন ২৭ রান করা শফিক। এরপর দলীয় একশ পার হতেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান অভিজ্ঞ ব্যাটার আজহার আলিও। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৭ বলে ১৭ রান। লম্বা সময় ধরে একপ্রান্ত আগলে রাখা ওপেনার ইমামকে বিদায় করেন স্পিনার লিয়ন। ইনিংসের ৬২তম ওভারে ফেরার আগে ১৯৯ বলে ৭০ রান করেন তিনি।
এরপর পরপর দুই ওভারে ফাওয়াদ আলম (১১) ও মোহাম্মদ রিজওয়ানকে (০) ফিরিয়ে দেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। রিজওয়ানের উইকেটে বেলায় অবশ্য ভুল সিদ্ধান্ত দেন আলিম দার। তখন একটি রিভিউও বাকি ছিল পাকিস্তানের। কিন্তু নন স্ট্রাইকে থাকা অধিনায়ক বাবর আজম সেই রিভিউ নিতে দেননি রিজওয়ানকে। ফলে ১৬৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় পাকিস্তান।
সেখান থেকে ষষ্ঠ উইকেটে স্পিনার সাজিদ খানের সঙ্গে ৪৬ রান যোগ করেন বাবর। পরপর দুই ওভারে বাবর (৫৬) ও সাজিদকে (২১) ফেরান নাথান লিয়ন ও মিচেল স্টার্ক। তখনই প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার জয়। পরে হাসান আলি একটি করে চার-ছয় মেরে পরাজয়ের ব্যবধান কমান শুধু। ইনিংসের ৯৩তম ওভারের প্রথম বলে নাসিম শাহকে বোল্ড করে ম্যাচ শেষ করেন কামিন্স। ফলে লাহোর টেস্টে ১১৫ রানের জয়ের সঙ্গে সিরিজও ১-০তে জয় করে নিয়েছে সফরকারীরা।
ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও সিরিজ সেরা হয়েছেন পাকিস্তানি বংশোভুত উসমান খাজা।