বিশ্বকাপের শিরোপা ধরে রাখার মিশনটা সুখকর হল না ইংল্যান্ডের। উদ্বোধনী ম্যাচে তাদের হেসে খেলে হারিয়েছে গত আসরের রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড। ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্রর অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটের দারুণ জয়ে আসর শুরু করলো কিউইরা। ত্রি-লায়ন্সদের দেওয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্য ৩৬ ওভার ২ বলে ১ উইকেট হারিয়ে টপকে যায় কিউইরা। কনওয়ে ১৫২ ও রাবীন্দ্র ১২৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। রাচিন রবীন্দ্র হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
২৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই ব্ল্যাকক্যাপসরা তুলে নেন ১০ রান। দারুণ শুরুর ইঙিত দেওয়া কিউইরা পরের ওভারেই হারায় প্রথম উইকেট। উইল ইয়াংকে ফেরান স্যাম কারেন। ইয়াং আউট হন শূন্য রানে।
এরপর ডেভন কনওয়ের সঙ্গে জুটি বাঁধেন রাচিন রাবীন্দ্র। ইংলিশ বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে ত্রয়োদশ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই ইতিহাসের অনন্য নজির গড়েন এই দুই ক্রিকেটার। নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে সবুজ গালিচায় ব্যাট হাতে দৃষ্টি নন্দন ব্যাটিং করে যায় তারা। রাচিন রবীন্দ্র নিজের অভিষেক বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই ম্যাজিক ফিগারের দেখা পান। তার আগেই কনওয়ে পেয়েছেন ওডিআই ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি।
কনওয়ে ও রাচিনের এটাই প্রথম বিশ্বকাপ। যদিও কনওয়ে বেশ পরীক্ষিত ব্যাটার। তবে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করা রাচিন যেন বিশ্বকে আগামীর বার্তা দিলেন। চোটের কারণে না খেলা নিয়মিত অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসনের অভাব একদমই বুঝতে দিলেন না বাঁহাতি এই ব্যাটার।
দ্বিতীয় উইকেটে রাচিনকে সঙ্গে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ২৭৩ রানের জুটি গড়েন কনওয়ে। বিশ্বকাপ তো বটেই ওয়ানডেতে দ্বিতীয় উইকেটে এটাই নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ রানের জুটি। পঞ্চম সেঞ্চুরি ও ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলে ১২১ বলে ১৯ চার ও ৩ ছক্কায় ১৫২ রানে অপরাজিত থাকেন কনওয়ে। অন্যদিকে ৯৬ বলে ১১ চার ও ৫ ছক্কায় অপরাজিত ১২৩ রানের ইনিংস উপহার দেন রাচিন।
এর আগে জো রুটের লড়াকু ইনিংসে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রানের সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৪০ রান তোলে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। এ সময় ম্যাট হেনরির বলে টম লাথামকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন দাউভিদ মালান। ২৪ বলে ১৪ রান করেন ইংলিশ ওপেনার। তবে জনি বেয়ারস্টো ছিলেন কিছুটা মারমুখী। ৩৫ বলে ৩৩ রান করে মিচেল স্যান্টনারের শিকারে পরিণত হন তিনি। তখন স্কোর বোর্ডে ইংল্যান্ডের রান ৬৪।
এরপর হ্যারি ব্রুককে নিয়ে এগোতে থাকেন জো রুট। ব্রুক ছাড়াও তিনি জুটি গড়েন মঈন আলি, জস বাটলার ও লিয়াম লিভিংস্টোনের সঙ্গে। ব্রুক টি-টোয়েন্টি স্টাইলে সঙ্গ দিচ্ছিলেন রুটকে। কিন্তু রাচিন রবীন্দ্রকে পরপর বলে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দেন, সেই বল লুফে নিতে ভুল করেননি ডেভন কনওয়ে। ১৬ বলে ৪ বাউন্ডারি ও এক ওভার বাউন্ডারিতে ২৫ রান করেন ব্রুক।
মঈনের সঙ্গে রুটের জুটিটা খুব বেশি দীর্ঘায়িত হয়নি। ১৭ বলে ১১ রান করে বিদায় নেন ইংলিশ অলরাউন্ডার। এরপর জস বাটলার দাঁড়িয়ে যান রুটের সঙ্গে। দুজনে মিলে চাপ তৈরি করছিলেন কিউই বোলারদের ওপর। দীর্ঘক্ষণ পর তাদের জুটি ভাঙেন হেনরি। ৭০ রানের জুটি হয় বাটলার-রুটের মধ্যে। ৪২ বলে ৪৩ রান করে ফেরেন ইংলিশ অধিনায়ক।
লিয়াম লিভিংস্টোন ভালো শুরু পেলেও ২২ বলে ২০ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে ভুল শট খেলে আউট হন। তখন সেঞ্চুরির কাছে চলে গিয়েছিলেন রুট। সেঞ্চুরি থেকে ২৩ রান দূরে থাকতে তাকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে দেন পার্টটাইম বোলার গ্লেন ফিলিপস। ৮৬ বলে ৭৭ রান করতে ৪টি চার একটি ছক্কা হাঁকান রুট। শেষ দিকে ইংল্যান্ডকে সংগ্রহটা বাড়িয়ে নিতে সাহায্য করেন আদিল রশিদ ও মার্ক উড। দুজনে মিলে শেষ উইকেটে ৩০ রানের জুটি গড়ে তুলেন। ১৩ বলে রশিদ ১৫ ও ১৪ বলে উড করেন ১৩ রান করেন।