সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে ভারতের বিপক্ষে জয়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এমন ম্যাচের আগে দলের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ছাড়ায় মাঠে নামতে হয়েছে তাদের। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারতের সামনে ২৫৭ রানের লক্ষ্য দাঁড় করায় বাংলাদেশ দল।
অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পুনের ব্যাটিং প্যারাডাইস উইকেটে সিদ্ধান্তটা সঠিকই ছিল বলা যায়। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের পুরোপুরি মান রাখেন দুই ওপেনার।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি আসে লিটন দাস ও তানজিদ তামিমের ব্যাট থেকে। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপে ৬৯ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ ও মেহরাব হোসেন অপি। তাদের ওই রানই এতদিন ধরেছিল বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের উদ্বোধনী জুটি। সেটি ছাড়িয়ে যান তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস।
রানের সন্ধানে থাকা তানজিদ তামিম খেলেছেন দুর্দান্ত এক ইনিংস। মারকুটে ব্যাটিং উপহার দিয়ে তুলে নেন ফিফটি। ৫ চার আর ৩ ছয়ে ৪১ বলে আসে তার অর্ধশতক। কিন্তু এরপরেই বাংলাদেশ ইনিংসের লাগাম টেনে ধরেন কুলদীপ যাদব। তার বলে এলবিডব্লিউ এর ফাঁদে পড়েন তানজিদ তামিম। ফেরেন ৫১ রান করে। ভাঙে ৯৩ রানের জুটি।
উইকেটে আসা অধিনায়ক শান্তকে বেশিক্ষণ দেখা যায়নি । ৮ রানে রবীন্দ্র জাদেজার বলে আউট হয়ে ফিরে যান তিনি। উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই ফেরেন মেহেদি মিরাজ। ১৩ বলে ৩ রান করা মিরাজকে ফেরান মোহাম্মদ সিরাজ।
তবে অপরপ্রান্তে ঠিকই উইকেট আকড়ে খেলে যাচ্ছিলেন লিটন দাস। সবরকমের বিতর্ক ছাপিয়ে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ১২তম ওয়ানডে ফিফটি। ফিফটির পরই আগ্রাসী হওয়ার আভাস দিয়েছিলেন লিটন। সেখানেই কাটা পড়েছিলেন তিনি। ৬৬ রানে জাদেজার বলে শুভমান গিলের হাতে ধরা পড়েন এই উইকেট রক্ষক ব্যাটার।
ক্রিজে আসা তাওহীদ হৃদয় ৩৫ বল খেলেও কোনো বাউন্ডারির দেখা পাননি। শেষ পর্যন্ত তার উইকেট তুলে নেন শার্দুল ঠাকুর। শুবমান গিলের হাতে ধরা পড়ার আগে হৃদয়ের ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ রান।
শুরুতে মনে হওয়া সাড়ে তিনশ রান পরে এসে ঠেকে আড়াইশর আশায়। কিন্তু তার জন্য ক্রিজে থাকতে হতো মুশফিকুর রহিমকে। তিনি আউট হন জাদেজার দুর্দান্ত এক ক্যাচে। বুমরাহর স্লোয়ার ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট অঞ্চল দিয়ে খেলেন মুশফিক, টাইমিংও হয় ভালো। কিন্তু ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন জাদেজা। শেষ হয় তার ৩৮ রানের ইনিংস। কিছুক্ষণ পর উইকেট হারান নাসুম আহমেদও। তিনি বিদায় নেন ১৪ রান করে।
পরের রানের কৃতিত্বটা কেবল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরই। ব্যাট হাতে তিনি খেলেন দারুণ ইনিংস। তবে চার রানের আক্ষেপ নিয়ে বিদায় নিতে হয় তাকে। শেষ ওভারে বুমরাহর করা দ্বিতীয় বলে বোল্ড হন তিনি। এর আগে খেলে যান ৩৬ বলে ৪৬ রানের এক দারুণ ইনিংস। শেষদিকে শরিফুলের ৩ বলে ৭ রানের ক্যামিওতে আড়াইশ ছাড়ানো সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ভারতের পক্ষে জোড়া উইকেট পান দুই পেসার জসপ্রিত বুমরাহ ও মোহাম্মদ সিরাজ।