প্রকৃতিতে মানব সৃষ্ট দূষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শব্দদূষণ। আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়ত নানা উৎস থেকে সৃষ্টি হচ্ছে অবাঞ্ছিত শব্দ। কখনও গাড়ির হর্ন বিঘ্ন ঘটাচ্ছে স্কুলের পড়াশোনায়। আবার প্রতিবেশীর গানবাজনার শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন কেউ কেউ।
অবাঞ্ছিত শব্দ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এর একটি বড উদাহরণ ইয়ার প্লাগ কিংবা নয়েজ ক্যান্সেলেশন হেডফোন। যার বদৌলতে আমরা গান শোনা বা ফোনে কথা বলার সময় বাইরের আওয়াজ কোন ব্যাঘাত করতে পারে না।
এবার ইসরায়েলের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সাইলেন্টিয়াম বাজারে নিয়ে এসেছে অনুরূপ একটি প্রযুক্তি। কুয়াইট বাবল (Quiet Bubble) নামের এই প্রযুক্তির ঘরের ভেতর অবাঞ্ছিত শব্দ কমাতে সক্ষম। এমনকি বিছানায় আপনার পাশে শুয়ে থাকা প্রিয়জনের নাক ডাকার শব্দও ঠেকাতে পারবে এটি।
এই প্রযুক্তিটি মূলত একটি স্পিকার ও মাইক্রোফোনকে নিয়ে গঠিত। সহজ করে বললে এর মাইক্রোফোনটি অবাঞ্ছিত শব্দের তরঙ্গ শনাক্ত করে এবং স্পিকারটি ঠিক বিপরীত মাত্রার আরেকটি শব্দ তরঙ্গ নির্গত করে যা বাইরের উৎস থেকে আশা শব্দটিকে স্তিমিত করে দেয়।
এই অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন প্রযুক্তিটিই কয়েক বছর ধরে হেডফোনে ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু সাইলেন্টিয়াম শুধুমাত্র আপনার কানই নয় পুরো ঘরকেই শব্দদূষণ থেকে মুক্ত করবে।
সাইলেন্টিয়ামের প্রধান নির্বাহী ইয়োয়েল নাওর বলেন, “আপনি চাইলে এই প্রযুক্তিটি গাড়িতেও ব্যবহার করতে পারবেন। এর মাধ্যমে আপনার বাচ্চারা পেছনের সিটে বসে জোরে জোরে গান শুনলে বা চিৎকার চেঁচামেচি করলেও সামনের সিটে বসে আপনি সেই শব্দ খুব একটা শুনতে পারবেন না।”
সাইলেন্টিয়াম বলছে, এই প্রযুক্তিটি ‘স্বতন্ত্র শব্দের উৎসও’ তৈরি করতে সক্ষম। এর মাধ্যমে কোন স্পিকারের শব্দ নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে যেতে পারবে না। অর্থাৎ স্পিকারের শব্দটি ব্যবহারকারীর কানকে লক্ষ্য করেই প্রবাহিত হবে।
তাই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কেউ ট্রেনে বা উড়োজাহাজে হেডফোন ছাড়াই গান শুনতে বা সিনেমা দেখতে পারবে। আর সেই শব্দ কাছাকাছি বসা অন্য লোকেদের বিরক্ত করবে না।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
আপনার মতামত লিখুন :