সাভারের আমিনবাজারে পবিত্র শবে বরাতের রাতে ৬ ছাত্রকে ডাকাত সাজিয়ে পিটিয়ে হত্যা মামলায় প্রধান আসামি মালেকসহ ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য আসামিদের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসেছে। একইসঙ্গে এসেছে মামলার নথিও।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মুহাম্মদ সাইফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ২ ডিসেম্বর সাভারের আমিনবাজারে ৬ ছাত্রকে ডাকাত সাজিয়ে পিটিয়ে হত্যা মামলায় প্রধান আসামি মালেকসহ ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।
অন্য আসামিদের মধ্যে ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ২৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
এদিকে মামলার মোট আসামি ৬০ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে তিনজন মারা গেছেন। অবশিষ্ট ৫৭ জনের মধ্যে ৪৫ জন ছিলেন হাজতে। আর পলাতক রয়েছেন ১২ জন।
এর আগে গত ২২ নভেম্বর আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় ঘোষণার জন্য ২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। একইসঙ্গে জামিনে থাকা ৪১ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ সময় মামলায় ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ৫৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় দেওয়া হলো।
২০১১ সালের ১৭ জুলাই রাতে সাভারের আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের কেবলাচরে ওই ৬ শিক্ষার্থী ঘুরতে গেলে ডাকাত সন্দেহে তাদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহত ছয় শিক্ষার্থী হলেন- ধানমন্ডির ম্যাপললিফ স্কুলের ‘এ’ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম শাম্মাম, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইব্রাহিম খলিল, বাঙলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশ, তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান, মিরপুরে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সিতাব জাবীর মুনিব এবং বাঙলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র কামরুজ্জামান।
অন্যদিকে নিহত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রথমে ডাকাতির মামলা করা হয়। তবে তাদের সঙ্গে থাকা বন্ধু আল-আমিন গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যাওয়ায় প্রকৃত ঘটনা জানতে পারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে এই ঘটনায় আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। সেটিতে পিটিয়ে হত্যায় জড়িতদের আসামি করা হয়।
চার্জশিটভুক্ত ৬০ আসামি হলেন- ডাকাতি মামলার বাদী আব্দুল মালেক, সাঈদ মেম্বর, আব্দুর রশিদ, ইসমাইল হোসেন রেফু, নিহর ওরফে জমশের আলী, মীর হোসেন, মজিবর রহমান, কবির হোসেন, আনোয়ার হোসেন, রজুর আলী সোহাগ, আলম, রানা, আ. হালিম, আসলাম মিয়া, শাহীন আহমেদ, ফরিদ খান, রাজীব হোসেন, হাতকাটা রহিম, মো. ওয়াসিম, সেলিম মোল্লা, সানোয়ার হোসেন, শামসুল হক ওরফে শামচু মেম্বার, রাশেদ, সাইফুল, সাত্তার, সেলিম, মনির, ছাব্বির আহম্মেদ, আলমগীর, আনোয়ার হোসেন আনু, মোবারক হোসেন, অখিল খন্দকার, বশির, রুবেল, নূর ইসলাম, আনিস, সালেহ আহমেদ, শাহাদাত হোসেন রুবেল, টুটুল, অখিল, মাসুদ, নিজামউদ্দিন, মোখলেছ, কালাম, আফজাল, বাদশা মিয়া, তোতন, সাইফুল, রহিম, শাহজাহান, সুলতান, সোহাগ, লেমন, সায়মন, এনায়েত, হয়দার, খালেদ, ইমান আলী, দুলাল ও আলম। এর মধ্যে ৩ জন মারা গেছেন।