তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাজধানী ঢাকায় বেড়েছে যানজট। দুই কারণে যানজট সৃষ্টি হয়েছে ধারণা করা হচ্ছে। তা হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে যাওয়া এবং তিন দিনের ছুটিতে ঘরমুখী মানুষের ঢল। ফলে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। বুধবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ ও বাংলামোটরে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৩০-৪৫ মিনিটে এক স্থানে যানবাহন দাঁড়িয়ে আছে। এদিকে বাড্ডা লিংক রোড থেকে রামপুর, মৌচাক, মালিবাগ, কাকরাইল ও গুলিস্থানে দীর্ঘ যানজট লক্ষ্য করা যায়। চৈত্র মাসের তপ্ত দুপুরে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ। যানজট শুধু দুপুরেই না সকালেও দেখা যায়। সকালে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েও নির্ধারিত সময়ে পৌঁছতে পারেনি অফিসগামীরা। উত্তরা থেকে কারওয়ান বাজার এসে অফিস করেন রওনক ইসলাম। প্রতিদিনের মতো আজও গণপরিবহনে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে উঠেছিলেন বাসে। দুপুর ১টার পর পৌঁছান কারওয়ান বাজার। মাঝখানে বাস থেকে নেমে কিছু পথ হেঁটেও পাড়ি দিয়েছেন।
নিজের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে রওনক ইসলাম বলেন, “দীর্ঘদিন পর দীর্ঘ যানজটে পরলাম। করোনার মধ্যে খুব সহজেই উত্তরা থেকে কাওরান বাজার এসেছি। করোনা কমে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে গেছে। এ কারণে যানজট বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে।” যানজটে আটকে থাকার পর আর অফিসে ঢোকার ইচ্ছে করছিল না উল্লেখ করে রওনক ইসলাম আরও বলেন, “অফিসে ১০টায় ঢুকার কথা, কিন্তু এসেছি বেলা ১টার দিকে।” এদিকে বিপত্তিতে পড়ে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী এবং বৃদ্ধরাও। মঙ্গলবার সারা দেশে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়। এরপর পাল্টে যায় রাজধানীর পুরো পরিস্থিতি। থেমে থেমে চলতে থাকে যানবাহন।
শিকড় পরিবহনের চালক মোকলেসুর রহমান বলেছেন, “মিরপুর-যাত্রাবাড়ী রুটে এর আগে দিনে ৪টা করে ট্রিপ হত। কিন্তু আজ যানজটে ২টির বেশি ট্রিপ হচ্ছে না। মালিককে জমা দেওয়ার পর হাতে আর কিছু থাকছে না।” হঠাৎ করে কী কারণে যানজট এ বিষয়ে জান চাইলে তেজগাঁও থানার ট্রাফিক সার্জেন্ট মতিউর রহমান সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “কয়েক দিন ধরে রাজধানীতে তীব্র যানজট লক্ষ করা যাচ্ছে। মঙ্গলবার রাজধানীসহ সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে রাজধানীর সড়কের ওপর চাপ বেড়েছে।” এদিকে পবিত্র শবে বরাতের কারণে সব মিলিয়ে তিন দিন ছুটিতে কবলে দেশ। সেটিও একটি কারণ বলে জানান মতিউর।
ট্রাফিক সার্জেন্ট আরও বলেন, “শবে বরাতের কারণে আজ অনেকে অফিস ছুটির পর গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা হয়েছেন। এক সঙ্গে এতো মানুষ ঢাকা ছাড়তে চাওয়ার কারণেও আজ যানজট বেশি হয়েছে।” যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।