• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬
কবির ভাষায় প্রধানমন্ত্রী বললেন

‘মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২২, ০৩:২৩ পিএম
‘মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন বছরের প্রথমে বিখ্যাত কবি রবার্ট ফ্রস্টয়ের কবিতা আবৃত্তি করে বলেন, “চলার পথ যত কণ্টকাকীর্ণ হোক, যত রক্তক্ষরণ হোক সব পদদলিত করে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে এগিয়ে যাব এটাই হচ্ছে আমার প্রতিজ্ঞা।”

রোববার (২ জানুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কতৃর্ক বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ উত্তোরণের স্বীকৃতি প্রদান আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অথনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ আয়োজিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমি জানি স্বাধীনচেতা হলে অনেক বাধা আসে আর দেশকে ভালোবেসে শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে যারা পথ চলে তাদের পথ চলা কখনো সহজ হয় না। অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়। চলার পথ যতই অন্ধকারাচ্ছন্নই হোক না কেন, যত বন্ধুর হোক না কেন, যত কন্টকাকীর্ণ হোক, সেখানে আমরা থেমে থাকবো না। অন্তত আমি এই প্রতিজ্ঞা করছি, থেমে থাকবো না। চলার পথ যত কণ্টকাকীর্ণ হোক, যত রক্তক্ষরণ হোক সব পদদলিত করে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে এগিয়ে যাব এটাই হচ্ছে আমার প্রতিজ্ঞা।” 

প্রধানমন্ত্রী বিখ্যাত কবি রবার্ট ফ্রস্টয়ের ‘স্টপিং বাই উডস অন এ স্নোয়ি ইভনিং’ কবিতার কয়েকটি পংক্তি আবৃত্তি করে বলেন, “উডস আর লাভলি ডার্ক এ্যান্ড ডিপ, বাট আই হ্যাভ প্রমিসেস টু কিপ, এ্যান্ড মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ, এ্যান্ড মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণকে টেকসই করতে একটি জাতীয় সরল উত্তরণ কৌশল (স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি) প্রণয়নের কাজ হাতে নিয়েছি।”

২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই জাতীয় দলিলে উত্তরণের সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সব ধরনের দিক-নির্দেশনাসহ কার্যকর কৌশল থাকতে হবে।”

সম্যক গবেষণা ও সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের উপর ভিত্তি করে একটি প্রমাণ-নির্ভর সময়োপযোগী কার্যকর কৌশল প্রণয়নে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান তিনি।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, “আমরা জাতির পিতা স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবোই। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তোরণের স্বীকৃতি এই স্বপ্ন বাস্তবায়নকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি জানি অনেক বুলেট, বোমা, গ্রেনেড আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। আমি কখনো সেগুলো নিয়ে পরোয়া করি না। আমি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করি। আর যারা আমার সহযোগী, আমার সঙ্গে আছেন তাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানাই। কেননা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য তারা সকলে কাজ করে যাচ্ছেন।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে যে লক্ষ্য স্থির করেছিলেন সেই লক্ষ্য অর্জন করতে হবে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা সেই লক্ষ্য অর্জনে নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছিলাম তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। তরুণ প্রজন্মকে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা, যাতে তারা এই অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে পারে। কেননা তারুণ্যের শক্তিকে আমরা দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা বিজয়ী জাতি। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। বিশ্ব দরবারে বিজয়ী জাতি হিসেবে সম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে আমরা চলব।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “চিরদিন কেউ বাঁচে না। কিন্তু যেই কাজ আমরা করে গেলাম সেই গতি যেন হারিয়ে না যায়, চলার গতি যেন অব্যাহত থাকে, বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যায় সেটাই আমরা চাই।”

সরকার প্রধান বলেন, “নতুন প্রজন্মের কাছে এটাই আমাদের দাবি, অন্তত আমি তাদেরকে এটুকু আহ্বান করব- দেশকে ভালোবাসবে, মানুষকে ভালোবাসবে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে। সেখানেই শান্তি, সেখানেই অগ্রগতি, সেখানেই নিয়তি, সেখানেই স্বস্তি। আর বাংলাদেশের এই চলা অব্যাহত থাকবে।”

Link copied!