অশালীন ও বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো মুরাদ হাসান দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে কানাডা যাওয়ার টিকিট কেটেছেন বলে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনস সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডা. মুরাদের অশ্লীল বক্তব্যের ৩৮৭টি লিংক চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এর মধ্যে ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে তার অশালীন বক্তব্যের ১৭টি অডিও-ভিডিও সরানো হয়েছে। ফেসবুক থেকে ১৫টি ও ইউটিউব ২টি অপসারণ করা হয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে মুরাদ হাসান অশালীন বক্তব্য দেওয়ার পর সেটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরপর চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার একটি ফোনকল ফাঁস হয়। সেখানে মুরাদকে আপত্তিকর কথা বলতে শোনা যায়।
এমন বক্তব্যে মুরাদ হাসানের পদত্যাগ দাবি করে বিএনপি। এছাড়া নারী অধিকারকর্মীরাও তার পদত্যাগ দাবি করে বিবৃতি দেয়।
এসব ঘটনা মধ্যেই সোমবার রাতে মুরাদ হাসান প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার রাতেই গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এরপর মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠান ডা. মুরাদ। প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো এই পদত্যাগপত্রে প্রতিমন্ত্রী মুরাদ বলেন, “২০১৯ সালে আমাকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। আমি অদ্য ৭ ডিসেম্বর থেকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক।”
“এমতাবস্থায় আপনার নিকট বিনীত নিবেদন এই যে, আমাকে অদ্য ৭ ডিসেম্বর তারিখ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের লক্ষ্যে পদত্যাগপত্রটি গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।”
মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য। পেশায় চিকিৎসক এই রাজনীতিবিদ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য। এর আগে তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। পরে ২০১৯ সালের মে মাসে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।