• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবহন বন্ধের প্রভাব কাঁচাবাজারে


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২১, ১১:৪০ এএম
পরিবহন বন্ধের প্রভাব কাঁচাবাজারে

সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে রাজধানীর কাঁচাবাজারে। নিত্যপণ্যের সঙ্গে বেড়েছে মাছের দামও। শীতের সবজি এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কিছুটা কমেছে।

শুক্রবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, নতুন পণ্যবাহী ট্রাক বাজারে প্রবেশ করেনি। আগের মজুত থাকা পণ্যই বেচাকেনা চলছে। পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণায় ব্যবসায়ীরা পণ্যের মজুত কমে যাওয়ার শঙ্কায় দামও বাড়িয়েছেন। বেশি প্রভাব পড়েছে মাছের দামে। 

কারওয়ান বাজারের মাছবাজার ঘুরে দেখা যায়, রুই ও কাতল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। শোল মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, তেলাপিয়া ও পাঙাশ ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। নলা মাছ পাওয়া যাচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে।

মাছ ব্যবসায়ী আবুল মিয়া বলেন, “গত বছরের তুলনায় ইলিশ মাছের দাম বেশি। তবে ইলিশের দাম কিছুটা কমেছে। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ আমরা ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। ইলিশ মজুত হলে দাম কমবে।”

ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, “পরিবহন বন্ধ। মাছের দাম শিগগির কমবে না। বেশ কিছু মাছের দাম আগের মতোই রয়েছে। কিছু মাছের দাম বেড়েছে।”

এদিকে মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়। দুই সপ্তাহে আগে ছিল ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা। লেয়ার মুরগি আগের মতো ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ী নিবারন মন্ডল বলেন, “ব্রয়লার মুরগির আমদানি (সরবরাহ) বেড়েছে। খামারেও প্রচুর ব্রয়লার মুরগি রয়েছে। এ কারণে দাম কিছুটা কমেছে।”

এছাড়া ১১৫ থেকে ১২০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছিল ডিম, যা এখন ১১০ থেকে ১১৫ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে পেঁয়াজের ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির বাজারেও দাম বেড়েছে। গাজর ১০০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, শিম, ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, ঢেঁড়সের দাম বেড়ে এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পটোলের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটির ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। মহাখালী থেকে কারওয়ান বাজার আসা ক্রেতা আসাদ বলেন, “প্রতি সপ্তাহেই দাম বাড়ে। একটি পণ্য কমলে অন্যটি বেড়ে যায়। সুষ্ঠু তদারকি নেই। পরিবহন বন্ধ বলে দাম বাড়ছে। কিন্তু এসব পণ্য তো আগেই মজুত ছিল। সবকিছুই ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। সরকারের হস্তক্ষেপ না হলে এর সমাধান হবে না।”

ক্রেতা জীবন সরকার বলেন, “অল্প আয়ে ঢাকায় টিকে থাকাই এখন কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সবকিছুরই দাম বাড়ে কিন্তু আয় তো বাড়ে না। সমন্বয় দরকার। মৌলিক চাহিদা মেটানোও এখন দুরূহ হয়ে পেড়েছে।”

এদিকে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী তোফায়েল বলেন, “ডিজেলের দাম বাড়ানোর কারণে এখন পরিবহন খরচ বাড়বে। তাই সবজির দাম খুব একটা কমবে না। পরিবহন ধর্মঘট চললে পণ্যের দাম আরও বাড়বে।”

Link copied!