• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস রুখে দেবে আ.লীগ


সফিকুল ইসলাম
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩, ০৯:২৩ পিএম
বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস রুখে দেবে আ.লীগ

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচাল করতে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে নানা তৎপরতায় লিপ্ত হচ্ছে বিএনপি। তাদের হাতে এদেশ কখনো নিরাপদ নয়। তারা সুযোগ পেলেই অগ্নিসন্ত্রাস করবে। নির্বাচনের ১০ মাস আগে থেকেই দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথেই বিএনপিকে রুখে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা দল আওয়ামী লীগ। শুধু তাই নয়, আগামী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত পাড়া-মহল্লা ও রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবিলা করতে মাঠে আছে আওয়ামী লীগ। দলের শীর্ষপর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে।

দলটির নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, “বিএনপি শক্তি দেখাতে চাইলে সরকার ও আওয়ামী লীগ একই কায়দায় জবাব দেবে।”

দলীয় সূত্র বলছে, চাপে রেখে ও শক্তি প্রয়োগ করেই বিএনপিকে গত প্রায় ১৪ বছর ‘নিয়ন্ত্রণে’ রেখেছে সরকার। এখনো তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার যে সক্ষম।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তিনজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছেন, “সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন সমাবেশে ঘোষণা দিয়ে এই দাবি অর্জন সম্ভব নয়। এমনকি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করার বিষয়টি আলোচনার টেবিলেও আনতে রাজি নন তারা। কারণ, বিদ্যমান সাংবিধানিক কাঠামোতে তা সম্ভব নয়। ফলে বিএনপিকে দাবি আদায় করতে হলে শক্তি দিয়ে বাধ্য করতে হবে সরকারকে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বিএনপির পক্ষে তা করা সম্ভব হবে না।”

জানা গেছে, সম্প্রতি সময়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশ করে আসছে। প্রতি দু-একদিন অন্তর অন্তর মহানগরের ব্যানারে এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিএনপির একটি কঠোর বার্তা দিতে চাইছে। 
তারমধ্যে রয়েছে, রাজনীতি করতে হলে আগামী নির্বাচনে যেতে হবে, নয়তো পুরোনো মামলাগুলো আবারো সচল হবে। বিএনপিকে আরও চাপে রাখতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সমন্বয়ে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে ৪০টি জেলার কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়। এছাড়া যেসব জেলার নাম উল্লেখ নেই সেসব জেলায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণে ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এসব সমাবেশে টানা ১৪ বছরের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরার পাশাপাশি বিএনপির আমলে দেশ পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়নের চিত্র দেশবাসির কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।

এ বিষয়ে কথা হয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানকের। তিনি বলেন, “নির্বাচনকে বানচাল করতে বিএনপি মাঠে নেমেছে। নির্বাচনে যাওয়া তাদের উদ্দেশ্যে নয়, তাদের উদ্দেশ্য দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচনকে বানচাল করা। তবে জনগণ তা কখনো হতে দেবে না।”

নানক বলেন, “বিএনপি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্র করছে। ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের রাজপথেই রুখে দিতে হবে। বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবিলা করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সর্বদায় প্রস্তুত আছে।”

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “বিএনপি যেখানে পদযাত্রার ডাক দিয়েছে আমরা সেখানে কর্মসূচি দেইনি। বিএনপি ঢাকা শহরে বিভিন্ন সময় কর্মসূচির ডাক দিয়েছে, আমরা ১০ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছি। আমরা কোনো পাল্টা কর্মসূচি দেইনি। আমরা পাল্টা কর্মসূচি দিতেও চাই না। কারণ বিএনপির কতটুকু শক্তি আছে আমাদের জানা আছে।”

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, “বিএনপি আন্দোলন করতে পারবে না, তারা পারে শুধু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে। এই দেশে রাজনীতির নামে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দিতে আমরা পারি না। আমরা দেব না।”

একইসুরে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। তিনি বলেন, “যখনই নির্বাচন আসে তখনই মিথ্যা অপপ্রচার নিয়ে সামনে আসে বিএনপি। বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। বিএনপির হাতে কখনো দেশের মানুষ নিরাপদ নয়। সুযোগ পেলে তারা আবারও দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা করবে। জনগণের জানমাল রক্ষায় আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে এবং থাকবে।”

এ বিষয়ে কথা হয় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিল্পব বড়ুয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেকোনো পরিরিস্থতি মোকাবিলায় মাঠে আছে। এখন থেকে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকব। মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রকে পাহারা দিতে হবে।”

Link copied!