কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কোনো কথা বলা ঠিক না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “যার ধর্ম সে পালন করবে এবং আমরা সেই চেতনায় বিশ্বাস করি। ধর্ম হচ্ছে মানুষের বিশ্বাস। ধর্ম বর্ণ যাই থাকুক না কেন, কার মধ্যে কি শক্তি আছে সেটি আমরা জানি না। সৃষ্টিকর্তাই জানেন।”
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিকালে শুভ জন্মষ্টমী উপলক্ষে শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
সনাতন ধর্মালম্বীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কখনো নিজের ভেতরে হীনম্মন্যতা রাখবেন না। নিজেকে আলাদা ভাববেন না। এই মাটিতে যাদের জন্ম তারা নিজেদের মতো করে নিজেদের ধর্ম পালন করবে।”
আমরা মানবধর্মে বিশ্বাস করি জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাই করতেন। শ্রীকৃষ্ণ সে কথাই বলে গেছেন। পবিত্র কোরআনেও রয়েছে যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। কোনো ধর্মের ধর্মগুরু কখনো সংঘাত চাননি। শান্তি চেয়েছেন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবের দেশ। এই দেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। সেই নীতি নিয়েই আমরা প্রতিটি গৃহহীন মানুষকে ঘর বানিয়ে দিচ্ছি। জীবন-জীবিকার জন্য নগদ অর্থ দিচ্ছি। ট্রেনিং দিচ্ছি এবং তাদের সব ধরনের সুবিধা করে দিচ্ছি।”
তিনি বলেন, “আমরা সেটি কোনো সম্প্রদায়ভিত্তিতে করছি না। সবার জন্য করছি, সার্বজনীনভাবে করছি। অর্থাৎ মানবতা প্রেম, মানবতার জন্য কাজ করা মানবতার উন্নতি করা এটাই আমাদের লক্ষ্য। এটিই আমরা বিশ্বাস করি। আর সেই বিশ্বাস নিয়ে চলি। কাজেই আমরা এখানে চাই যে আমাদের সব ধর্মের মানুষের অধিকার নিয়ে সমানভাবে বসবাস করবে।”
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কিছু জিনিসের দাম বেড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তবে কেউ কেউ আবার অধিক মুনাফার জন্য অতিরঞ্জিত করছে। করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। ইউরোপে ইনফ্লেশন (মুদ্রাস্ফীতি) ১০ দশমিক ১ শতাংশে উঠে গেছে। সব দেশেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। আমাদের যে জিনিসগুলো আমদানি করতে হয়, তার প্রতিটির দাম বেড়ে গেছে।”
তিনি বলেন, “সবাইকে কিছুটা কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে। আমি জানি আমাদের জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পরে কিছু জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। তবে যেটা স্বাভাবিকভাবে বাড়ার কথা নয়, কেউ কেউ আবার অধিক মুনাফার জন্য কিছু অতিরঞ্জিত করছে। কাজেই সেখানে আমরা মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করেছি এবং খোঁজখবর নিচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কিছু ব্যবস্থা নেবো। যেমন- ৫০ লাখ মানুষ যাতে ১৫ টাকা কেজিতে চাল কিনতে পারে। এক কোটি মানুষকে আমরা পারিবারিক কার্ড দিয়ে দিচ্ছি, যাতে তারা ন্যায্যমূল্যে চাল-ডাল এবং তেল-চিনি কিনতে পারে। সেজন্য একটি বৈঠক করা হয়েছে। প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম যেন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। মানুষ যেন কষ্ট না পায়, সেজন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
আপনার মতামত লিখুন :