• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বৃষ্টির অজুহাতে বাড়ল পেঁয়াজের দাম


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২, ০১:৪৭ পিএম
বৃষ্টির অজুহাতে বাড়ল পেঁয়াজের দাম

মাঘের শেষে হঠাৎ বৃষ্টিতে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দুই দিনে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে পাঁচ টাকা। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। ভোজ্যতেলের দাম আরও এক দফা বাড়লেও অপরিবর্তিত আছে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য পণ্য।

শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ পাঁচ টাকা বেড়ে বর্তমানে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই দিন আগেও যা ছিল ৩৫ টাকা। পাইকারি বাজারে দুই দিন আগে ১৬০ টাকা বিক্রি হওয়া প্রতি পাল্লা (পাঁচ কেজি) দেশি পেঁয়াজ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। এছাড়া আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা।

পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির জন্য হঠাৎ বৃষ্টিকেই দায়ী করছেন বিক্রেতারা। কারওয়ান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. মানিক জানান, শীতকালে প্রতিদিনই ক্ষেত থেকে তুলে বাজারে সরবরাহ করা হয়। মাঘের শেষে হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় পেঁয়াজ নষ্টের আশঙ্কা রয়েছে। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে।

পেঁয়াজের মতোই দাম বেড়েছে আলুর। বর্তমানে প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫ টাকা। এছাড়া লাল আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, মিষ্টি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। তবে অপরিবর্তিত আছে আদা, রসুনের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি চীনা আদা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা, দেশি আদা ১২০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১১০ টাকা, দেশি রসুন ৫০ টাকা।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ফের বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। এর আগে ব্রয়লার মুরগির দাম এক মাসের ব্যবধানে ৫০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকাও ছুঁয়েছিল। তারপর ধীরে ধীরে কিছুটা কমে এখন আবার বাড়ছে।

এছাড়া বর্তমানে প্রতি কেজি লাল সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা, সাদা হাইব্রিড সোনালি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা এবং লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা।

মুরগি বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় দাম বাড়ছে। আকবর নামের এক মুরগি বিক্রেতা জানান, মুরগির খাদ্য, ওষুধ ও সারের দাম বেশি হওয়ায় অনেক খামারি উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছেন। এছাড়া শীতকালে মুরগির রোগবালাই বেশি হওয়ায় অনেক খামারি এই সময় মুরগির উৎপাদন বন্ধ রাখেন। তাই ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নেই। আর সরবরাহ না থাকায় দামও বাড়তি।

এদিকে আরও এক দফা বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম। বর্তমানে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা এবং পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা। এছাড়া পুষ্টি ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা, বসুন্ধরা ৭৫০ টাকা, তীর ৭৭০ টাকা এবং রূপচাঁদা ৭৮০ টাকা।

তবে অপরিবর্তিত আছে সবজিসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, মূলা ৩০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, মটরশুঁটি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, শালগম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, শিমের বিচি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পাকা টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৪০ টাকা, খিরা ৫০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৯০ টাকা, কুমড়া ৩০ টাকা, কচুর মুখি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও চিচিঙ্গা ৮০ টাকা। প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, প্রতি আঁটি পেঁয়াজের কলি ১০ টাকা, কাঁচকলা ৩০ টাকা ও লেবু ৫০ টাকা। এছাড়া প্রতি আঁটি লালশাক ১০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, পালংশাক ১০ টাকা, ডাঁটাশাক ২০ টাকা এবং লাউশাক ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

বর্তমানে বাজারে দেশি মুরগির হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, লাল মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা, ব্রয়লার মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৪ টাকা এবং হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। এছাড়া প্যাকেট করা প্রতি কেজি লাল চিনি বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা, সাদা চিনি ৮৫ টাকা, খোলা সাদা চিনি ৮০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ৯০ টাকা, ময়দা দুই কেজির প্যাকেট ১১৮ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১২০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১০০ টাকা।

আগের মতোই আছে চালের বাজার। বর্তমানে প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৩ থেকে ৬৬ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, স্বর্ণা (গুটি) ৪৪ টাকা, স্বর্ণা (পাইজাম) ৪৫ টাকা, আটাশ ৪৬ থেকে ৫২ টাকা।

এদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা ক্রেতাদের। তারা বলছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে তাদের দিশেহারা অবস্থা। চাহিদা অনুযায়ী তারা ঠিকমতো বাজার করতে পারছেন না। সরকার দ্রুত দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ না নিলে সামনে অনেক নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষকে না খেয়েই থাকতে হবে।

Link copied!