• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

উচ্ছেদের পরেও বহাল আছে ডিএনসিসি’র সেই পরিত্যক্ত মার্কেট


জাহিদ রাকিব
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২২, ০৯:৫৬ পিএম
উচ্ছেদের পরেও বহাল আছে ডিএনসিসি’র সেই পরিত্যক্ত মার্কেট

প্রথমবার ২০০৬ সাল এবং দ্বিতীয়বার ২০১৯ সালে পরিত্যক্ত ঘোষিত হয় রায়েরবাজার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মার্কেট। বেশ কয়েকবার ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে এই মার্কেটটি গণমাধ্যমের শিরোনামও হয়েছে। তারপর ২০১৯ সালের দ্বিতল মার্কেটের একাংশ ভেঙে ফেলে ডিএনসিসি। তারপর কোনো এক অজানা কারণে মার্কেটের নিচ তলা আর ভাঙা হয়নি। চলতি বছর অক্টোবরে সংবাদ প্রকাশে ‘পরিত্যক্ত মার্কেটে ব্যবসা, রাজস্ব থেকে বঞ্চিত ডিএনসিসি’—এই শিরোনামে সংবাদ প্রচারের পর টনক নড়ে ডিএনসিসির। এবার আবারও পরিত্যক্ত মার্কেটের সামনের অংশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বেশ কিছু স্থাপনা নামেমাত্র উচ্ছেদ করা হয়। ওই অংশ উচ্ছেদ করা হলেও দাঁড়িয়ে আছে বার বার পরিত্যক্ত ঘোষিত রায়েরবাজার ডিএনসিসি মার্কেট।

গত ১৫ নভেম্বর ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওই পরিত্যক্ত মার্কেটে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০০টির বেশি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে ডিএনসিসি। উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেন অঞ্চল-৫-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০০৬ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণার পরেও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভাঙছে না সিটি করপোরেশন। তাদের দাবি, মার্কেটের ৯৭৫টি দোকানের ট্রেড লাইসেন্স বাতিলের পরে এখনো ব্যবসা করছে তারা। ফলে ডিএনসিসি যেমন কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি আছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

সরেজমিনে দেখা যায়, মার্কেটের দেয়াল ও ছাদের আস্তরণ ভেঙে পড়েছে। কোথাও কোথাও লাল ইট কালচে হয়ে বেরিয়ে এসেছে। ১৬ বছর আগেই ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হয় ভেঙে ফেলারও। কিন্তু পরে আর তা হয়নি। ফলে সিটি করপোরেশনকে রাজস্ব না দিয়ে পরিত্যক্ত মার্কেটে বহাল তবিয়তে অনেকটা জোরজবস্তি ব্যবসা করছেন দোকানিরা।

স্থানীয়রা জানান, ২০০৬ সালে ঘোষণার পর মার্কেটের সামনে ‘ঝুঁকিপূর্ণ পরিত্যক্ত’ লেখা সাইনবোর্ড ছিল। সম্প্রতি বাজারের ব্যবসায়ীরা সাইনবোর্ডটি খুলে ফেলেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, আগে ক্রেতারা গাড়ি নিয়ে মার্কেটে ঢুকতেন। ঝুঁকিপূর্ণ সাইনবোর্ডের কারণে ক্রেতা কমে যায়। বিক্রি কম হওয়ায় সাইনবোর্ডটি খুলে ফেলা হয়েছে।

এ বিষয়ে কথা হয় নগর পরিকল্পনাবিদ আদিল মোহাম্মদ খানের সঙ্গে। তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “দুর্ঘটনা তো আগে থেকে বলে আসে না। ২০০৬ সালে রায়েরবাজারের ওই মার্কেটটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও তা এখনো ভাঙা হয়নি। এই মার্কেটে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে প্রাণহানি হলে এর দায় সিটি করপোরেশন এড়াতে পারবে না। সিটি করপোরেশনের উচিত সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে মার্কেটটি দ্রুত ভেঙে নতুন মার্কেট নির্মাণ করা।

এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “ডিএনসিসির ঝুঁকিপূর্ণসহ অন্য মার্কেটগুলো নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সাতটি মার্কেট ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া কারওরান বাজারের বাজারটি গাবতলী ও যাত্রাবাড়িতে স্থানান্তর করা হবে।”

সেলিম রেজা আরও বলেন, “ডিএনসিসির আওতায় সকল মার্কেট সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় আনার লক্ষ্যে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ নিয়ে দফায় দফায় সভা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে গুলশান মার্কেটের আধুনিকায়নে ‘সিটি বন্ড’ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এভাবে ধাপে ধাপে সব মার্কেট সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হবে।”

Link copied!