প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্বাচন কমিশনের ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত গরিবের ঘোড়া রোগ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু।
তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশনের ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়।”
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে এক মতবিনিয়ম সভায় মুজিবুল হক চুন্নু এসব কথা বলেন।
ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে জাতীয় পার্টি মহাসচিব বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশন হচ্ছে, আওয়ামী লীগের নির্বাচন কমিশন। কমিশনের প্রত্যেককে আমরা চিনি। এরা সবাই আওয়ামী লীগের শাসনামলে ভালো নিয়োগ, প্রমোশন এবং পোস্টিং পেয়েছেন। এরা সবাই আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী।”
নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক পদে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া তিনি নিয়োগ দিতে পারেন না। তাই আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীরাই নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ পেয়েছেন।”
পাকিস্তানসহ বিশ্বের অনেক দেশই ইভিএমে নির্বাচন বন্ধ করেছে, ভারতেও সমালোচনা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “ভারতের কংগ্রেস ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে, তারা আর ইভিএমে ভোট করবে না। সারা বিশ্বেই ইভিএম নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে কিন্তু আমাদের নির্বাচন কমিশন প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ইভিএম কিনতে উঠেপড়ে লেগেছে।”
জাতীয় পার্টি মহাসচিব বলেন, “ইভিএমের কোনো দোষ নেই, কিন্তু যারা ইভিএম পরিচালনা করবে, তাদের তো দোষ আছে। তা ছাড়া ইভিএমে অনেক সময় আঙুলের ছাপ মেলে না। এতে ঝামেলা সৃষ্টি হয়, ভোট গ্রহণে বিলম্ব হয়। দেশের মানুষ এখনো ইভিএমে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। তা ছাড়া দেশের মানুষ মনে করে, ইভিএম হচ্ছে নীরবে ভোট কারচুপির মেশিন।”
মুজিবুল হক চুন্নু আরও বলেন, “সব রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেওয়া হলো। শাসক দল শুধু ইভিএমে ভোট নেওয়ার পক্ষে কথা বলেছে। সরকারের শরিক কিছু দলগুলো বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে ইভিএম চেয়েছে। আর দেশের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ ইভিএমে ভোট গ্রহণের বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। যদি রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের মতামতের গুরুত্ব না থাকে তাহলে কেন আমাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করলেন? নির্বাচন কমিশনের আচরণ প্রমাণ করে তারা নিরপেক্ষ নয়।”
জাতীয় পার্টি মহাসচিব আরও বলেন, “নির্বাচন কমিশনের বিবেক ও দেশপ্রেম নেই। যখন ডলারের অভাবে জ্বালানি তেল কিনতে পারে না দেশ, দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের মানুষের হিমশিম অবস্থা। দেশের মানুষ বাজার করতে পারে না। অসুখ ও শিশুখাদ্য কিনতে পারছে না। এমন বাস্তবতায় প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ইভিএম মেশিন কেনার কোনো যুক্তি নেই। সরকার মানুষের কষ্টের টাকায় ইভিএম না কিনে এক কোটি দুস্থ ও বেকারকে সহায়তা করতে পারে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. নুরুল আজহারের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান খান, এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু।



































