করোনাভাইরাসের কারণে গতবারের মতো এ বছরও বইমেলায় ‘শিশু প্রহর’ নেই। তাই শিশু-কিশোররা প্রথমদিকে কিছুটা নিরাশ হলেও নতুন শিশুতোষ বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত তারা।
বইমেলা শুরুর পর আজ শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) প্রথম ছুটিদিন। নির্ধারিত সময়ে বেলা ১১টায় বইমেলায় প্রবেশ করতে পেরে আনন্দিত দর্শনার্থীরা। এদিকে মেলার চতুর্থ দিন আজ সকাল থেকে শিশু-কিশোরদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ক্ষুদে পাঠকদের উপস্থিতি ছিল বেশি। ছুটির দিন হওয়াতে সকাল সকাল বাবা-মায়ের হাত ধরে মেলায় এসেছে তারা। ক্ষুদে পাঠকদের সঙ্গে কথা হয় আমাদের প্রতিবেদকের।
শিশু-কিশোররা জানিয়েছে, পছন্দের সব বই নির্বাচন করতেই তারা আজ বেশি ব্যস্ত। শিশুদের পছন্দের তালিকাতে আছে হাস্যরসাত্বকসহ ভূতের সব গল্পের বই। তাছাড়া শিশুদের পছন্দের তালিকাতে রয়েছে ছড়া ও ছবির বইও। পাশাপাশি শিশু চত্বরে খেলাধুলা করে সময় কাটছে তাদের।
রাজধানীর একটি স্কুলের শিক্ষক অনামিক চক্রবর্তী তার ছেলে বাঁধনকে নিয়ে মেলায় এসেছেন। বাঁধন চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। ঠাকুরমার ঝুলি পড়তে খুব ভালো লাগে তার।
বাঁধন বলেছে, “গত বছর ক্লাস থ্রির ছাত্র ছিলাম আমি। এবার চতুর্থ শ্রেণীতে ওঠেছি। মেলায় এসে দেখি এবারও ‘শিশু প্রহর’ নেই। তাই প্রথমে মনটা খারাপ হয়ে যায়। তবে বিভিন্ন বিক্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখলাম শিশুদের পড়ার জন্য অনেক বই এসেছে।”
বাঁধন আরও বলেছে, “করোনার কারণে আমাদের ক্লাস বন্ধ রয়েছে। ১ মার্চ থেকে প্রাইমারি স্কুলে ক্লাস শুরু হবে। নতুন বন্ধুদের বই উপহার দেওয়ার জন্য মেলায় বই কিনতে এসেছি। ঠাকুরমার ঝুলিসহ পাঁচটি বই কিনে নিয়ে যাব আমি।”
কথা হয় শিশুতোষ বই ‘বাবুইয়ের’ প্রকাশক কাদের বাবুর সঙ্গে। কাদের বাবুর বলেন, “শিশুদের পাঠ উপযোগী অনেক বই মেলায় এসেছে। এখন ভালো ভালো বই প্রকাশ পাচ্ছে। তরুণ লেখকরা এখন গবেষণাধর্মী শিশুতোষ বই প্রকাশ করছে। শিশুদের মনে আনন্দ যোগায় এমন বই পাওয়া যাবে বইবিতানগুলোতে।”
বাংলা একাডেমির তথ্যকেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, আজ মেলায় এসেছে নতুন ১৭৭টি বই। আর এ পর্যন্ত প্রকাশিত বই এর সংখ্যা ২৩৬টি।
জানা যায়, এবারের বইমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি স্টল এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মোট ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬টি বইয়ের স্টল বরাদ্দ পেয়েছে। গত বছর বইয়ের স্টল সংখ্যা ছিল ৮৩৪টি। কিন্তু এবার বেড়েছে প্যাভিলিয়নের সংখ্যা। গত বছর প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ছিল ৩৩টি, এবার ৩৫। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করছে।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। ওইদিন বিকেলে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বইমেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩৮তম এ বইমেলা চলবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।