অবশেষে বিতর্কিত আমির হামজার নাম বাদ দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। শুক্রবার (১৮ মার্চ) এই সংশোধিত পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২ দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য আমির হামজাকে মরণোত্তর পদক দেওয়ার ঘোষণা হলে তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আহ্বায়ক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, “স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত আমির হামজার নাম ঘোষণার পর বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।”
মোজাম্মেল হক আরও বলেন, “আমরা পত্রপত্রিকায় দেখেছি, লক্ষ্য করেছি বিভিন্ন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের মতামত। আমি খতিয়ে দেখি সেগুলো সঠিক অভিযোগ কি না।”
মন্ত্রী বলেন, “যেমন- মার্ডার, এগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত কি না? তার সাহিত্যকর্ম কী আছে, সেগুলো ভালো করে খতিয়ে দেখব।”
এবারের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হয় গত ১৫ মার্চ। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে পদক পাচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা (বীর বিক্রম), আবদুল জলিল, সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, মরহুম মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন বিশ্বাস ও মরহুম সিরাজুল হক।
চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া ও অধ্যাপক মো. কামরুল ইসলাম এবার স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। সাহিত্যে মো. আমির হামজা এবং স্থাপত্যে মরহুম স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন। এবার প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিডব্লিউএমআরআই) এ পুরস্কার পাচ্ছে।
সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য পুরস্কার তালিকায় প্রয়াত আমির হামজার নাম ঘোষণা হওয়ায় নাগরিক মহলে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেন। ‘বাঘের থাবা’, ‘পৃথিবীর মানচিত্রে একটি মুজিব তুমি’ ও ‘একুশের পাঁচালি’ নামে তার তিনটি বইয়ের হদিস পাওয়া যায়।
জন্মস্থান মাগুরায় তাকে ‘চারণ কবি’ হিসেবে চিনতেন অনেকে। তিনি গানের আসরে বসে গান লিখতেন, সুর করতেন। তবে তাঁর সাহিত্যকর্মের মান ছাড়াও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় দেখা যায় তিনি একটি খুনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী। এরপর থেকেই ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে এই পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রক্রিয়াটি।