মৌমাছির চাকে হাত দিয়ে স্পর্শ করতে গেলে হুল তো ফোটাবেই। কখনো মৌমাছির চাক পর্যন্তও যেতে হয় না। উড়ে বেড়ানো মৌমাছি কোত্থেকে এসে হুল ফোটায় তা টেরও পাওয়া যায় না। মৌমাছি একবার হুল ফোটালে সেই জায়গাটা লাল হয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ফুলে যায়। তীব্র জ্বালা ও ব্যথা অনুভূত হয়। এটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক।
মধু চাষিদের জন্য় মৌমাছির হুল ফোটানোর ঘটনা খুবই সাধারণ। এটি খুব বিপজ্জনক না হলেও, এর বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়া খুবই সাধারণ। কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যালার্জি পর্যন্ত হতে পারে।
মৌমাছি হুল ফোটালে কিছু ঘরোয়া উপায় স্বস্তি মিলবে। ঘরোয়া কার্যকরী কিছু উপায় জানাব আজকের আয়োজনে—
- মৌমাছি হুল ফোটালে সেই স্থানে মধু লাগিয়ে নিন। এটি কার্যকর প্রতিকার। মধু ক্ষত নিরাময় করে। প্রদাহ এবং চুলকানি দূর করার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত সহায়ক। মধুতে অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। মৌমাছি কামড়ালে প্রথমে সেই স্থানে সামান্য পরিমাণে মধু লাগিয়ে হালকা ঘষে নিন। তারপর একটি ব্যান্ডেজ দিয়ে আলগাভাবে ক্ষত স্থানটি এক ঘণ্টার মতো বেঁধে রাখুন। জ্বালাভাব কমে যাবে এবং ফোলাও কমবে।
- বেকিং সোডা অত্যন্ত কার্যকর জীবাণুনাশক। মৌমাছি হুল ফোটালে ব্যথা, চুলকানি এবং ফোলা ভাব কমাতে এটি দুর্দান্ত কাজ করে। বেকিং সোডার সঙ্গে সামান্য পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। পেস্টটি ক্ষত স্থানে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। ব্যথা কমে যাবে। একবারে না হলে কয়েকবার চেষ্টা করুন।
- অ্যাপেল সিডার ভিনেগারও চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। এতে অ্যান্টি-ইচিং গুণ রয়েছে। অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে ক্ষতস্থানে দিয়ে রাখুন। এছাড়াও এক টুকরো পরিষ্কার কাপড় বা ব্যান্ডেজ অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে ভিজিয়েও ক্ষতস্থানে দিন। ব্যথা কমবে।
- এসেনশিয়াল অয়েলও মৌমাছির হুল ফোটানোর অংশে দিতে পারেন। এটি অত্যন্ত কার্যকর উপায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যথা কমে যাবে।
- টি ট্রি অয়েল জ্বালাভাব কমায়। লালচে ভাব এবং চুলকানি প্রশমিত করতে। পানি মিশ্রণটি ট্রি অয়েলকে অলিভ বা নারকেল তেলের মতো যেকোনো ক্যারিয়ার অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে ক্ষত স্থানে লাগান।
- ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল এটি ক্ষতকে জীবাণুমুক্ত করার সাথে সাথে, ব্যথা-জ্বালা কমাতেও সহায়তা করে। এটি শক্তিশালী অ্যাস্ট্রিনজেন্ট, যা ত্বকের ব্যাকটেরিয়া বিশোধিত করতে পারে এবং প্রদাহকে শান্ত করতে পারে।
- পেঁপেতে পাপাইন নামক এনজাইম রয়েছে। যা চুলকানি এবং ব্যথা কমাতে পারে। ক্ষত স্থানে এক টুকরো পেঁপে ঘষে নিন। কমপক্ষে ৩০ মিনিটের মতো রেখে দিন। জাদুর মতো কাজ করবে।
- অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং বেদনানাশক হিসেবে ব্যবহার হয় অ্যালোভেরা। ক্ষতস্থানের চুলকানি ও জ্বালাভাবকে প্রশমিত করতে এটি সহায়তা করে। অ্যালোভেরা জেল নিয়ে সরাসরি ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখুন। উপকার পাবেন।
- মৌমাছি হুল ফোটানোর সঙ্গে সঙ্গেই কয়েক টুকরো বরফ পাতলা পরিষ্কার কাপড়ে নিয়ে ক্ষতস্থানে বেঁধে রাখুন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিন। ব্যথা না কমা পর্যন্ত এটি নিয়মিত প্রয়োগ করুন। জ্বালাভাব কমে যাবে।