• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

কিছু মানুষ সবসময় কেন দেরি করে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২৩, ০৬:২০ পিএম
কিছু মানুষ সবসময় কেন দেরি করে

কিছু মানুষ আছেন সবসময় দেরি করেন। অফিসের কাজেই শুধু নয়, এর ছাপ তারা রাখেন ব্যক্তিগত কাজেও। নির্দিষ্ট সময়ের আধাঘণ্টা/ এক ঘন্টা পরে না আসলে যেন তাদের গতানুগতিকতাই রক্ষা হয় না।

কর্মজীবন হোক বা ব্যক্তিগত সময় অপেক্ষা করানোই যাদের অভ্যাস তাদের ওপর আমাদের বিরক্ত না হয়ে উপায় থাকে না। তবে সহকর্মী হোক বা আপনজন, যার প্রতীক্ষায় বিরক্ত হচ্ছেন জেনে রাখুন হয়তো তিনি নিতান্ত স্বার্থপরের মতো এমনটা করেন না সব সময়। দেরির এই মানসিকতার গভীর বিশ্লেষণে দেখা যায়, মনোজগতের কিছু ত্রুটির কারণেই এমনটা হয়। তবে এর সমাধানও রয়েছে। তবে এই দেরি করার পেছনে কিছু ভুল ধারণা এবং কিছু সমাধান জেনে নিই চলুন—

দেরি স্বভাবের মানুষের বিনয়হীন আর অলস নয়
সময়ানুবর্তী নয়, এমন লোকের ব্যাপারে সবার ধারণা চিরকালই নেতিবাচক। তবে বেশিরভাগ সময়েই তা ভুলভাবে বিশ্লেষণ। সাইকোলজিস্টরা বলছেন, সময়ানুবর্তীতাহীন ব্যক্তিরা আসলে এক ধরনের মানসিক সমস্যার শিকার, যাদের বলা যায় ‍‍`পাঙ্কচুয়ালি- চ্যালেঞ্জড‍‍`। অথচ একারণে অন্যদের কতোটা বিরক্তি উদ্রেক হতে পারে বা কাজের কতোটা ক্ষতি হতে পারে তা নিয়ে কিন্তু তারা ভালো করেই বোঝেন এবং সে জন্য লজ্জা আর অপরাধবোধেও ভোগেন। দেরির স্বভাবের মানুষেরা আসলে কিছুটা কম সুশৃঙ্খল হলেও তারা কিন্তু বন্ধুবান্ধব, পরিবার বা অফিসের বড় কর্তাকে আসলে খুশিই রাখতে চান। দেরি তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কে, সম্মান ও ক্যারিয়ারে কতোটা ক্ষতিকর হতে পারে তাও তাদের অজানা নয়।

অজুহাত 
আকস্মিক দুর্ঘটনা বা অসুস্থতার মতো কিছু ক্ষেত্রে দেরির অজুহাত সবাই মেনে নেয়। কিন্তু, অন্যগুলি মেনে নেওয়া সহজ নয়। নিয়মিত দেরি করাদের অনেকে সময়নিষ্ঠ হওয়ার চেয়ে বিভিন্ন জটিল চিন্তা-ভাবনায় মগ্ন থাকাকে এজন্য অজুহাত দিয়ে নিজেকে ব্যতিক্রম হিসেবে জাহির করেন। কেউবা বলেন, কাজের চাপ বাড়লেই তারা বেশি সাবলীল পারফর্ম করেন, আর কেউবা দোষ দেন রাতে না ঘুমানোর স্বভাবকে। 
নিয়মানুবর্তিতাহীন অনেকেরই ব্যক্তিত্বে আশাবাদের মাত্রাটা একটু বেশি থাকে। একেক জনের কাছে অতিবাহিত সময়ের ব্যক্তিগত উপলদ্ধিও ভিন্ন ভিন্ন হয়। অর্থাৎ, কেউ কেউ পাঁচ মিনিট বসে থাকলেই হাঁপিয়ে ওঠেন, কারো তাতে লাগে ৩০ মিনিট।    

নিজেই নিজের শত্রু
অধিকাংশক্ষেত্রেই দেরি করা ব্যক্তিরাই মানসিকভাবে দ্বিধা-সংশয় থাকেন। অনেক সময় একটি কাজকে সম্পূর্ণ নিখুঁতভাবে করতে চাওয়া মানুষেরাও অহেতুক দেরির দোষে অভিযুক্ত হন। অনেকে কিছু কাজে ভয় বা অবসাদ অনুভব করলেই স্বাভাবিক গতি হারান। এক্ষেত্রে মনোচিকিৎসকরা বলেন, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে দেরি আসলে তাদের অবসাদগ্রস্ত মানসিক স্বাস্থ্য বা মস্তিস্কের নিউরোলজিক্যাল সমস্যার ফসল।

সময় মেনে চলা সম্ভব

মনোচিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ক্রমাগত দেরির অভ্যাস তৈরি হয় অতিরিক্ত চিন্তা-ভাবনার সমস্যা থেকে। কোনো কাজকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে করা ব্যক্তি যদি কাজের মানের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসের অভাবেও ভোগেন, তাহলে তিনি নির্ঘাত নির্ধারিত সময়ে তা শেষ করার ডেডলাইন মিস করবেন। অফিসের কোনো মিটিঙয়ের যোগ দিতেও দেরি করবেন। এখানে ভয়ই তার মনে কাজ পেছানোর ইন্ধন যোগাতে থাকে। 
তাই নিজের সম্পর্কে সঠিক মূল্যায়নও জরুরি। চাই আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি। আর সেজন্য মনোরোগ চিকিৎসকের সুপরামর্শ আপনার ভীষণ কাজে দেবে। কারণ, একবিংশ শতকের জীবনের এই দৌড়ে আমরা কেউই আসলে সবার শেষে থাকতে চাই না।

Link copied!