• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫

কলাগাছের আঁশে মনিপুরি শাড়ি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৩, ১২:৩২ পিএম
কলাগাছের আঁশে  মনিপুরি শাড়ি

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজির উদ্যোগ ও অনুপ্রেরণায় দেশে প্রথমবারের মতো তৈরি হলো কলাগাছের সুতা দিয়ে দৃষ্টিনন্দন শাড়ি। বান্দরবানের জেলা প্রশাসকের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সিলেটের মৌলভীবাজার থেকে বান্দরবানে ছুটে আসেন প্রশিক্ষক রাধাবতী দেবী। তার তত্ত্বাবধানে দীর্ঘ একমাসের প্রচেষ্টায় কলাগাছের সুতা দিয়ে শাড়ি তৈরি হয়েছে।
 

১৩ হাতের এ শাড়ির নাম রাখা হয়েছে ‘কলাবতী’।  

এ বিষয়ে প্রশিক্ষক রাধাবতী দেবী বলেন, “বাংলাদেশে বিভিন্ন সুতা দিয়ে শাড়ি তৈরি হয়। তবে দেশে প্রথমবার কলাগাছের সুতা থেকে একটি শাড়ি তৈরি করলাম। বান্দরবানের জেলা প্রশাসকের অনুরোধ ও তার সার্বিক সহযোগিতায় এটা সফল হয়েছে।”

রাধাবতী দেবী আরও বলেন, “প্রথম পর্যায়ে একাধারে ১৫ দিন এবং এক কেজি কলাগাছের আঁশের সুতা দিয়ে এই আকর্ষণীয় শাড়ি তৈরি করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীতে আরও কম সময়ে ও কম খরচে আরও উন্নতমানের শাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে।”  

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর বান্দরবানের উপ-পরিচালক আতিয়া চৌধুরী বলেন, “আমাদের জেলা প্রশাসকের অনুপ্রেরণায় আমরা বান্দরবানবাসী গর্বিত। তার অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ কলাগাছের সুতা থেকে শাড়ি হলো। আগামীতে আরও নিত্যনতুন সামগ্রী উৎপাদন হবে। যাতে নারীদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি আরও তরান্বিত হয়।”

বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ও এই শাড়ি তৈরির সার্বিক সহযোগী সাই সাই উ নিনি বলেন, “বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজির দুরদর্শী চিন্তার ফসল এই কলাগাছের সুতা থেকে তৈরি ১৩ হাত দৃষ্টিনন্দন শাড়ি। পরিবেশবান্ধব এ শাড়ি সবার কাছে দ্রুত সময়ে পৌঁছে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।”

জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, “নানা প্রতিকুলতা পাড়ি দিয়ে চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমরা কলাগাছের সুতা থেকে একটি দৃষ্টিনন্দন শাড়ি তৈরি করতে পেরেছি। এটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমন আকর্ষণীয়। বান্দরবানের নারীরা কলাগাছ থেকে আঁশ তৈরি করে আরও বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প ও সৌখিন জিনিসপত্র তৈরি করছে বলে জানান দেন জেলা প্রশাসক।”  

তিনি আরও বলেন, “বান্দরবানে নারীদের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে বান্দরবান জেলা প্রশাসন একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেন। প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত কয়েকটি ধাপে স্থানীয় প্রায় ৪শ নারীদের কয়েক দফায় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। তাদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিভিন্ন হস্তশিল্প তৈরি করে তাদের ভাতা প্রদান করা হয়, যাতে তারা আগ্রহী হয় এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়। এখন লামা, রুমা ,আলীকদম ও থানচি উপজেলাতে এই পাইলট প্রকল্পের আওতায় নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বান্দরবানের নারীরা এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বুক ফোল্ডার, টেবিল মেট, পাপোস, শোপিস, কানের দুল,কলম দানিসহ বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব হস্তশিল্প তৈরি করছেন। এগুলো ভালো দামে বিক্রিও হচ্ছে।”  
 

Link copied!