পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সোয়াট উপত্যকায় সবচেয়ে প্রাচীন এক বৌদ্ধমন্দির আবিষ্কার করেছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। বিশ্বজুড়ে মৌলবাদী শক্তির এমন রমরমা পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে পাওয়া অতি প্রাচীন এই বৌদ্ধমন্দিরের নিদর্শন প্রাচীনযুগের ধর্মীয় সহিষ্ণুতারই অন্যতম পরিচয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জি নিউজ-এর প্রতিবেদনে জানা যায়, প্রাচীন এই বৌদ্ধমন্দিরটি প্রমাণ করে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে সোয়াট উপত্যকায় ছিল বৌদ্ধদের উপস্থিতি। প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানান, প্রচীন এই বৌদ্ধমন্দিরটি ইতালি ও পাকিস্তানের প্রত্নতত্ত্ববিদের যৌথ প্রয়াসে আবিষ্কৃত। যার দৈর্ঘ্য চার মিটার। সেই সঙ্গে রয়েছে প্রাচীন একটি রাস্তাও। এটি ছিল ওই শহরের অন্যতম প্রধান প্রবেশদ্বার।
প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানান, আলেকজান্ডারের সময়ে গ্রিকরা পাকিস্তানের সোয়াট উপত্যকার বাজিরা এলাকায় বসবাস করতো। এই শহরটিকে তারা দুর্গ হিসেবে গড়ে তুলেছিল। তারা মৌর্য সম্রাট অশোকের সময়ে নির্মিত ওই বৌদ্ধস্থাপত্যের কাঠামোগুলোর খোঁজ পায়।
প্রত্নতত্ত্ববিদদের ধারণা, খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকের মাঝামাঝি সময়ে রাজা ছিলেন মেনান্দার। তিনি স্থাপত্যকীর্তির আয়তন বাড়িয়ে নেন। চতুর্থ শতকের সময় এক ভূমিকম্পে বাজিরার কুশান শহরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই সময়ই মন্দিরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।
ইতালির প্রত্নতত্ত্ববিদদের নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক লুকা এম ওলিভেরি বলেন, 'মাটি খুঁড়ে পাওয়া বৌদ্ধদের এ স্থাপত্য মৌর্য যুগের। সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়। এটি একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। এতে গান্ধারে বৌদ্ধের অবয়বের রূপ প্রকাশ পেয়েছে। তক্ষশীলায় এ ধরনের মাত্র একটি মন্দির পাওয়া গিয়েছে। এই আবিষ্কার বৈপ্লবিক।'
পাকিস্তানের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কর্মকর্তা আবদুল সামাদ খান বলেন, 'এই আবিষ্কার গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচীনযুগের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, পরমতসহিষ্ণুতা ও নানা সংস্কৃতির একত্র বিকাশের বিষয়টি এই মন্দিরের মাধ্যমেই উঠে এসেছে।'