নতুন বছরের শুরুতে যেন আতশবাজির পরিবর্তে ক্ষেপণাস্ত্র উড়িয়ে বর্ষবরণ চলছে উত্তর কোরিয়ায়। যুক্তরাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী আর জাতিসংঘের হুঁশিয়ারি তোয়াক্কা না করে টানা চারবার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করলেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন।
দুই সপ্তাহ আগে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর সমালোচনার মুখে কিম বলেন, আত্মরক্ষার জন্য নতুন অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার করছে উত্তর কোরিয়া। আর কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না তারা।
এরপর যুক্তরাষ্ট্র-সহ ছয় দেশ যৌথ বিবৃতিতে সতর্ক করে দক্ষিণ চীন সাগরের এই পরাশক্তিকে। এর আগে জাতিসংঘও উত্তর কোরিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কাজ বন্ধ রাখতে আহ্বান জানায়।
তবে এসব সতর্কতায় যেন কিছুই আসে যায় না তাদের। স্থানীয় সময় সোমবার দেশের পূর্ব উপকূল থেকে সমুদ্রে একসঙ্গে আরও দুইটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে কিমের প্রশাসন। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, চলতি মাসেই এ নিয়ে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করল দেশটি।
এত ঘনঘন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় অস্বস্তিতে পড়েছে এসব প্রতিবেশী দেশগুলো। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান উভয়েই মতে, চারটি ক্ষেপণাস্ত্রই ব্যালেস্টিক তথা দূর পাল্লার। ফলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়েও বেড়েছে উদ্বেগ।
এএফপি ও রয়টার্স জানায়, এর মধ্যে দুইবার তারা সুপারসনিক তথা শব্দের চেয়েও দ্রুতগতির ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করে। প্রথমটি পরীক্ষা করা হয় ৫ জানুয়ারি, আর তারপর ১১ জানুয়ারি। এছাড়াও শুক্রবার ট্রেন থেকেও স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে তারা।
এর জেরে বাইডেন প্রশাসন প্রথমবার উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। জাতিসংঘের কাছেও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করার আবেদন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে উত্তর কোরিয়ার দাবি, আত্মরক্ষার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর পূর্ণ অধিকার রয়েছে তাদের। ফলে পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, আগামীতে আরও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে হাজির হবে দেশটি।