ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। রকেট হামলার পাশাপাশি ইসরায়েলি অধিকৃত ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছেন হামাসের যোদ্ধারা। এসময় তারা ইসরায়েলের বেশকিছু সেনা ও সাধারণ মানুষকে জিম্মি করেছেন। হামাসের দাবি, সব ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্ত করার মতো ইসরায়েলি বন্দী আছে তাদের কাছে।
কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের ডেপুটি চিফ সালেহ আল-আরৌরি বলেছেন, “ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের হাতে আটক ফিলিস্তিনিদের সবাইকে মুক্ত করার মতো যথেষ্ট সংখ্যক ইসরায়েলি বন্দী আমাদের হাতে রয়েছে।”
এই হামাস নেতা আরও বলেন, “আমরা বহু ইসরায়েলিকে হত্যা করেছি এবং বন্দী করেছি। লড়াই এখনও চলমান। ইসরায়েলের কারাগারে আটক বন্দীদের মুক্তি আসন্ন। আমাদের হাতে যত সংখ্যক আছে তাতে সবাইকে মুক্ত করে আনা যাবে। লড়াই যত দীর্ঘস্থায়ী হবে আমাদের মুক্তি পেতে যাওয়া বন্দীর সংখ্যা ততই বাড়বে।”
এদিকে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীও জানিয়েছে, দেশটির ‘বেশ কিছুসংখ্যক’ সাধারণ নাগরিক এবং সেনাসদস্যকে জিম্মি করে রেখেছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। জিম্মি হওয়া এসব ব্যক্তির মধ্যে আছে শিশু, নারী, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরাও।
ইসরায়েল সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফট্যানেন্ট কর্নেল জোনাথন কনরিকাস বলেছেন, “জিম্মি হওয়া এসব ব্যক্তির মধ্যে কেউ কেউ বেঁচে আছে। আবার কাউকে মেরে ফেলা হয়েছে।”
শনিবার সকালে হামাস ইসরায়েলে ব্যাপক রকেট হামলা চালায়। হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধারা ইসরায়েল–নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে ঢুকে পড়লে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জবাবে ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালানো শুরু করে ফিলিস্তিনের গাজায়। ইসরায়েল বলছে, হামাসের হামলায় ২৫০ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন।
বন্দীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠন (এনজিও) আদামিরের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৫ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি এখন ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী অবস্থায় আছে। তাদের মধ্যে ৩৩ জন নারী, ১৭০ অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ে রয়েছে।
হামাস ইসরায়েলে এ অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’। দখলদার ইসরায়েলের হাত থেকে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাই এ অভিযানের লক্ষ্য বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি।