• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ রমজান ১৪৪৫

প্রথমবারের মতো মানবদেহে দেওয়া হলো কৃত্রিম রক্ত


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২২, ০৫:৫৮ পিএম
প্রথমবারের মতো মানবদেহে দেওয়া হলো কৃত্রিম রক্ত

পরীক্ষাগারে তৈরি করা কৃত্রিম রক্ত প্রথমবারের মতো দুই ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করিয়েছেন যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক। বিবিসি জানায়, কৃত্রিম রক্তের ফলে তাদের শরীরে কী প্রভাব পড়ছে তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ব্লাড এন্ড ট্রান্সফিউশন বিভাগে ব্রিস্টল, ক্যামব্রিজ ও লন্ডনের গবেষক দল এ নিয়ে কাজ করছেন। ফুসফুস থেকে যেসব লোহিত রক্ত কণিকা সারা শরীরে অক্সিজেন পরিবহন করে তাদের নিয়েই করা হচ্ছে এ গবেষণা।

তবে কৃত্রিম বলা হলেও তা মোটেও রাসায়নিকভাবে তৈরি করা নয়। মানবদেহের বাইরে রক্ত থেকে রক্ত তৈরি করায় একে কৃত্রিম বলা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমে ৪৭০ মিলিলিটারের মতো রক্ত সাধারণ ডোনেশনের মধ্যমে নেয়া হয়। এরপর চুম্বক গুটি ব্যবহার করে সেখান থেকে সেসব স্টেম সেল আলাদা করে নেয়া হয়, যেগুলো লোহিত রক্ত কণিকায় পরিণত হতে সক্ষম। পরে এই স্টেম সেলগুলোকে পরীক্ষাগারে বিপুল পরিমাণে উৎপাদন করা হয় ও লোহিত কণিকায় পরিণত করা হয়।

এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে সময় লাগে প্রায় তিন সপ্তাহ। পাঁচ লাখ স্টেম সেল থেকে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদন করা যায়। এই লোহিত কণিকাগুলোকে ফিল্টার করে দেড় হাজার লোহিত কণিকা পাওয়া যায় যেগুলো ট্র্যান্সপ্লান্টের জন্য উপযুক্ত।

প্রাথমিকভাবে দুইজন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশ নিলেও কমপক্ষে ১০ জন স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে এই প্রক্রিয়া পরীক্ষা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাদের রক্তে সামান্য পরিমাণে তেজস্ক্রিয় পদার্থ মেশানো হয়েছে, যাতে করে তা কতদিন মানুষের শরীরে থাকে তা পর্যবেক্ষণ করা যায়।

গবেষকরা বলছেন, পৃথিবীর বেশিরভাগ রক্তদানের জন্য সবসময়ই মানুষের ওপর নির্ভর করতে হবে। তবে এই গবেষণার লক্ষ্য হলো অতি গুরুত্বপূর্ণ ও বিরল গ্রুপের রক্ত কৃত্রিমভাবে উৎপাদন করা।

‍‍`সিকল সেল অ্যানিমিয়া‍‍` রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য নিয়মিত রক্তের প্রয়োজন হয়। এ চিকিৎসায় সুপরিচিত ‍‍`এ‍‍`, ‍‍`বি‍‍`, ‍‍`এবি‍‍` এবং ‍‍`ও‍‍` গ্রুপ ছাড়াও আরও জটিল টিস্যু-ম্যাচিংয়ের প্রয়োজন পড়ে। যদি দাতা ও গ্রহীতার রক্ত হুবহু না মেলে তাহলে এই চিকিৎসা আর কাজ করে না।

ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক অ্যাশলি টয় বলেন, কিছু কিছু রক্তের গ্রুপ এতোটাই বিরল যে পুরো দেশে মাত্র ১০ জনের মতো ব্যক্তি তা দান করার উপযোগী হতে পারেন।

এসব বিষয়কে বিবেচনায় নিয়েই তাদের এই গবেষণা। তারা সফল হলে, বিশ্বে প্রতিদিন যে পরিমাণ রক্ত প্রয়োজন হয় তার বেশিরভাগই কৃত্রিমভাবে উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে ধারনা বিশেষজ্ঞদের।

Link copied!