রাজতন্ত্রের উত্থান-পতনের সাক্ষী যিনি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২, ০৮:৫৯ এএম
রাজতন্ত্রের উত্থান-পতনের সাক্ষী যিনি
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ

ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ বৃহস্পতিবার মারা গেছেন। জুন মাসে তিনি সিংহাসনে আরোহণের ৭০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন করেন। রানি এলিজাবেথ ১৯৫২ সাল থেকে টানা ৭০ বছর ধরে সিংহাসনে আসীন ছিলেন। ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের দীর্ঘ ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে দীর্ঘ সময় সিংহাসনে অধিষ্ঠিত থেকেছেন।

যুক্তরাজ্য এবং আরও ১৫টি কমনওয়েলথ রাজ্যের রানি ছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তিনি যেমন বিশ্বে ব্রিটিশ প্রভাব ব্যাপকভাবে কমতে দেখেছেন, তেমনি দেখেছেন সমাজের দ্রুত পরিবর্তন। একই সঙ্গে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হতেও দেখেছেন। তাঁর শাসনামলে ব্রিটেনে ১৬ জন প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পুরো নাম এলিজাবেথ আলেকজান্দ্রা মেরি উইন্ডসর। ১৯২৬ সালের ২১ এপ্রিল লন্ডনের বার্কলে স্কয়ারের কাছে একটি বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রিটিশ রাজা জর্জ এবং রানি এলিজাবেথের প্রথম সন্তান। তাঁর বাবা ১৯৩৬ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। সেই সময় থেকেই এলিজাবেথ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ছিলেন।

১৯৪৭ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ গ্রিক ও ডেনমার্কের প্রিন্স ফিলিপকে (ডিউক অব এডিনবরা) বিয়ে করেন। ফিলিপ গত বছরের ৯ এপ্রিল ৯৯ বছর বয়সে মারা যান। এলিজাবেথ-ফিলিপ দম্পতির চার সন্তান। তাঁরা হলেন ওয়েলসের যুবরাজ চার্লস (তিনি ব্রিটেনের নতুন রাজা), প্রিন্সেস অ্যান, ইয়র্কের ডিউক যুবরাজ অ্যান্ড্রু এবং আর্ল অব ওয়েসেক্স যুবরাজ এডওয়ার্ড।

১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাবা রাজা জর্জ মারা গেলে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিংহাসনে বসেন এবং কমনওয়েলথের প্রধান হন। ১৯৫০–এর দশককে রানির জন্য স্বর্ণযুগ হিসেবে দেখা যেতে পারে। রাজপরিবার ও রানির প্রতি মানুষের ব্যাপক শ্রদ্ধা ছিল। পরবর্তী কয়েক দশকে ব্যাপক সামাজিক পরিবর্তনের ফলে রাজতন্ত্রের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা কমতে থাকে। রানি সন্তানদের বৈবাহিক সমস্যা এবং এ–সম্পর্কিত কেলেঙ্কারির বিষয়গুলো গণমাধ্যমের শিরোনামে জায়গা করে নেয়। এরপরও মানুষ রানির কারণে রাজপরিবারের প্রতি উচ্চ ধারণা পোষণ করতেন।

নব্বইয়ের দশকে কিছু সমস্যায় পড়লেও ২০০০ সালের পরে এসে রানির জনপ্রিয়তা আবার বাড়তে থাকে। রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তার শাসনকালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকেন। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজনে খ্রিষ্টান হিসেবেই তার বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করেন রানি। তবে চার্চ অব ইংল্যান্ডের প্রধান হিসেবে ভূমিকায় থাকলেও তিনি সব ধর্মের অধিকার রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন। 

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!